Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Road Renovation Work

রাস্তা না করেই টাকা! রিপোর্ট তলব

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পথশ্রী প্রকল্পে ২৩০০ মিটার ওই রাস্তাটির জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছিল ৯৭,৪১,৬২৩ টাকার।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪ ০৯:১০
Share: Save:

তিনশো মিটার রাস্তা হয়নি। অথচ রাস্তা তৈরির টাকা পেয়ে গিয়েছেন ঠিকাদার সংস্থা। জেলা পরিষদের অন্দরে এ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পরে ওই ঠিকাদার সংস্থাকে রাস্তা সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন এমন হল, তা জানার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার। এই ধরনের গোলমাল যাতে ভবিষ্যতে না হয়, তার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।

গলসি ১ ব্লকের মনোহর সুজারপুর থেকে গলিগ্রাম লকগেট পর্যন্ত রাস্তাটির বেহাল দশা নিয়ে কিছুদিন আগে সরব হয়েছিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ কীর্তি আজাদ। সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তিনি। খারাপ রাস্তার পাথর তুলে সর্বসমক্ষে এক ইঞ্জিনিয়ারের পকেটেও ভরে দেন। সেই রাস্তা নিয়ে সত্যিই যে ‘দুর্নীতি’ রয়েছে জানতে পেরে দিল্লি থেকে সাংসদ ফোনে বলেন, “ওই ঠিকাদার সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা ও সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলাশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এখন জানতে পারছি, সম্পূর্ণ কাজ না করেও ঠিকাদার টাকা পেয়ে গিয়েছেন। তাজ্জব ব্যাপার! জেলাশাসককে তদন্ত করার জন্য চিঠি দেওয়া হচ্ছে।”

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পথশ্রী প্রকল্পে ২৩০০ মিটার ওই রাস্তাটির জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছিল ৯৭,৪১,৬২৩ টাকার। ৪.২৫% কম দিয়ে কাজটি পান নবদ্বীপের একটি ঠিকাদার সংস্থা। মাস দুয়েক আগে রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে রিপোর্ট পাওয়ার পরে জেলা পরিষদ ঠিকাদার সংস্থাটিকে টাকা মিটিয়ে দেয়। এরপরেই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির অভিযোগ ওঠে। সাংসদ সেখানে যাওয়ার পরেই জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার দফতরের টনক নড়ে। রাজ্য সড়ক উন্নয়ন দফতরেরও (এসআরডিএ) নজরে আসে। মাপজোক করে দেখা যায়, ২৩০০ মিটারের জায়গায় রাস্তাটি আদতে তৈরি হয়েছিল ১৯৯০ মিটারের মতো। এসআরডিএ ওই রাস্তা নিয়ে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে রিপোর্ট করেন।

জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, রিপোর্ট পাওয়ার পরে কর্তারা হতবাক হয়ে যান। বুধবার বিকেলে জেলা পরিষদের সভাধিপতির ঘরে এডিএম (জেলা পরিষদ) শুভলক্ষ্মী বসু, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কর্তারা বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সেখানেই কর্তারা সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারকে ভর্ৎসনা করেন। ঠিকাদার সংস্থাকে রাস্তাটি ঠিক ভাবে তৈরির নির্দেশ দেন। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে আরও সতর্ক থাকতেও বলা হয়। সভাধিপতি বলেন, “রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলে বলতে পারব।” পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মিঠু মাঝির দাবি, “যা বলার সভাধিপতি বলবেন।” আর সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার সংস্থার কর্তা পার্থ সাহার দাবি, “রাস্তার কাজ শেষ হয়নি।” তাহলে টাকা পেয়ে গেলেন কী ভাবে? তাঁর জবাব, “এর উত্তর জেলা পরিষদ দিতে পারবে।”

জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, “রাস্তাটা শেষ হওয়ার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Galsi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy