চলছে ধান কাটার কাজ। কালনার বাগনাপাড়া এলাকায় মধুমিতা মজুমদারের তোলা ছবি।
বোরো চাষে সেচের জল মেলেনি। তার উপর তীব্র দাবদাহে শুকিয়ে গিয়েছে এলাকার জলাশয়গুলিও। এই পরিস্থিতিতে মাঠের ফসল কী ভাবে বাঁচানো যাবে, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন কালনার চাষিরা। তবে শুক্রবার ঘণ্টা দু’য়েকর বৃষ্টির পর ছবিটা খানিক বদলেছে। চাষিদের আশা, জল পেয়ে তাজা হয়ে উঠবে খেতের ফসল।
গত বছর অগস্টের পর থেকে জেলায় ভারী বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তার উপর ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেন, ব্যারাজে জল কম থাকায় এ বার বোরো চাষের জন্য জল ছাড়া হবে না। এই পরিস্থিতিতে বোরো চাষের শুরুতেই বিপাকে পড়েন চাষিরা। গত কয়েক মাসের তীব্র দাবদাহে সমস্যা আরও বাড়ে। গরমে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায় দামোদর, ভাগীরথী। এর জেরে কালনা মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় নদী সেচ প্রকল্পগুলি কার্যত অকেজো হয়ে পড়ে। চাষিরা জানান, অবস্থা সামাল দিতে স্থানীয় বড় জলাশয়গুলির উপর ভরসা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও চাষের প্রয়োজনীয় জল মেলেনি। এলাকার অগভীর নলকূপগুলি থেকেও মেলেনি চাষের জল। কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে পড়ে যে কালনা, মন্তেশ্বর, পূর্বস্থলী ব্লকে মাটির জলস্তরও নামতে শুরু করে।
এই পরিস্থিতিতে জেলার ধান চাষের এলাকা বেশ খানিকটা কমে গিয়েছে বলে চাষিদের দাবি। কালনার ধান চাষি রবিন কিস্কুর দাবি, ‘‘জলাভাবে এ বার অন্তত ২০ শতাংশ ফলন কমে যেতে পারে।’’ শুধু যে চাষের এলাকা কমেছে তাই নয়। মাঠের ফসল বাঁচানো যাবে কিনা তা নিয়েও সংশয়ে ছিলেন চাষিরা। পূর্বস্থলীর এক চাষি বলেন, ‘‘বর্তমানে মাঠে পাট, তিল ও বেশকিছু সব্জি রয়েছে। জলাভাবে বহু খেতেই ফাটল ধরে গিয়েছিল। শুরু হয়েছিল পোকার উৎপাত। থমকে গিয়েছিল পাটের বৃদ্ধি।’’ দিন কয়েকের মধ্যে ভারী বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত বলে কৃষি বিশেষজ্ঞদের মত।
তবে শুক্রবার রাতে আকাশে মেঘ দেখেই চাষিরা আশায় প্রহর গুনতে শুরু করেন। অবশেষে ওই রাতে সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয় বৃষ্টি, কালবৈশাখী। ঘণ্টা দু’য়েকের টানা বৃষ্টিতে বহু খেতেই ফের জল জমতে দেখা গিয়েছে। আর তারপরেই ফের ফলন নিয়ে আশাবাদী চাষিরা। পূর্বস্থলীর সব্জি চাষি সূর্য প্রামাণিক জানান, জলাভাবে সব্জি-চাষে প্রভাব পড়তে শুরু করে। শুক্রবারের বৃষ্টির পর পরিস্থিতির বদল হবে। তবে শুক্রবারের মতো আরও কয়েক দফা বৃষ্টির দরকার রয়েছে বলে দাবি চাষিদের। জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘শুষ্ক আবহাওয়ার জেরে সব্জির পরাগমিলনের সমস্যা দেখা যাচ্ছিল। শুক্রবারের বৃষ্টি স্বস্তি দেবে চাষিদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy