Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
biriyani

বিরিয়ানি রঙিন করতে রাসায়নিক মেশানোর নালিশ

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে সুবোধ স্মৃতিরোড, কাছারি রোড, সার্কাস ময়দান, টেলিফোন ময়দান-সহ বেশ কিছু জনবহুল এলাকায় গত কয়েক বছরে প্রচুর বিরিয়ানির দোকান গজিয়ে উঠেছে।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ০৭:৩৯
Share: Save:

কয়েক বছর ধরেই কাটোয়া শহরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে বিরিয়ানির দোকান। শহরের জনবহুল এলাকাগুলির নানা প্রান্তে ঝাঁ চকচকে ওই সব দোকানে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে। ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, সস্তায় বিরিয়ানি দিতে গিয়ে কিছু বিক্রেতা অসৎ উপায় অবলম্বন করছেন। তাঁদের দাবি, ক্রেতাদের চোখ টানতে বিরিয়ানিতে মেশানো হচ্ছে ‘মেটানিল ইয়োলো’ কিংবা ‘কঙ্গো রেড’ নামে এক প্রকার রং। মানব শরীরে যা মারাত্বক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। কাটোয়ার এসিএমওএইচ বিপ্লব মণ্ডল বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। অভিযান চালানো হবে। খাবারের মান যাচাই করে দেখা হবে। ত্রুটি দেখলেই আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

শুধু বিরিয়ানির দোকানেই নয়, পথের ধারে অনেক দোকান ও রেস্তরাঁতে-ও খাবারে এই ধরনের রং মিশানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকি, মেলায় মিষ্টির দোকান ও ফাস্ট ফুড সেন্টারেও তা ব্যবহার করা হয়। জিলিপি, গজা, খাজা, চাওমিন, ঘুঘনি, ভেজিটেবল চপ-সহ নানা খাবারে দেদার মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকারক এই রং। খোলা বাজারে ১০ গ্রামের এই রঙের প্যাকেটের দাম সাড়ে পাঁচ থেকে সাত টাকা। প্যাকেটের গায়ে লেখা থাকে, মানবদেহের পক্ষে এই রং ক্ষতিকারক।

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কাটোয়া বিজ্ঞান কেন্দ্রের সহ-সভাপতি, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দেবব্রত মুখ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘কিছু বিরিয়ানি ও খাবারের দোকানে মেটনিল ইয়োলো ও কঙ্গো রেড জাতীয় ক্ষতিকারক রং খাবারে মেশানো হয়। ভেজিটেবল চপে বিট-গাজরের উপস্থিতি বোঝানোর জন্য লাল রং দেওয়া হয়। তেমনই বোঁদে, জিলিপি, নিমকি, ঘুঘনিতে নির্বিচারে হলুদ রং দেওয়া হচ্ছে। ওই সমস্থ খাবার পরীক্ষা করলেই তা বোঝা যাবে। এই রঙ মানুষের শরীরে গেলে নানা জটিল রোগ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি, ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। প্রশাসনের পদক্ষেপ করা উচিত।”

কাটোয়া শহরের হরিসভা পাড়ার বাসিন্দা অমিতাভ দাঁ ও শহরের মাধবীতলার পিনাকীচরণ দে-র অভিযোগ, ‘‘খুব সস্তায় বিরিয়ানি পাওয়া যায় এখন। কারখানায় ব্যবহার করা হয় এমন রং-ও মেশানো হয় খাবারে।’’

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে সুবোধ স্মৃতিরোড, কাছারি রোড, সার্কাস ময়দান, টেলিফোন ময়দান-সহ বেশ কিছু জনবহুল এলাকায় গত কয়েক বছরে প্রচুর বিরিয়ানির দোকান গজিয়ে উঠেছে। রাস্তার ধারে লাল কাপড়ে ঢাকা বড় বড় পিতলের হাঁড়িতে বিরিয়ানি রাখা থাকে। এখন এক প্লেট চিকেন বিরিয়ানি মেলে ৯০-১০০ টাকায়। আবার ১৫০-১৭০ টাকা দিলেই পাওয়া যায় মাটন বিরিয়ানি। ক্রেতারাই জানাচ্ছেন, আগে বিরিয়ানির দাম ছিল বেশ কিছুটা বেশি। প্রতিযোগিতা বাড়ায় এখন কম দামে বিরিয়ানি বিক্রি শুরু করেছেন বিক্রেতারা। ক্রেতা টানতে নানা অফার দিয়ে থাকেন কেউ কেউ।

কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে এমন খাবার বিক্রি করা অপরাধ। কাটোয়া শহরের দোকানগুলিতে পাওয়া খাবারের মান ঠিক রয়েছে কিনা তা দেখতে নজরদারি চালানোর কথা বলব পুরপ্রধানকে।”

অন্য বিষয়গুলি:

biriyani Food Katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE