ডিভিসি সেচখাল থেকে বেরিয়ে চারটি পঞ্চায়েত এলাকা দিয়ে বয়ে গিয়েছে একটি শাখা খাল। সারা বছর তাতে জল থাকে না। বোরো চাষ ও বর্ষার সময়ে ডিভিসির ছাড়া জল বহু কৃষিজমিতে পৌঁছয় ওই খাল দিয়ে। পাশাপাশি, মাঠে জমা জল নিষ্কাশনও বেরিয়ে যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংস্কার না হওয়ায় খালটির অনেক অংশ মজে গিয়েছে। ফলে জমিতে সেচের জল পৌঁছচ্ছে না। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি জানিয়েছে, খালের সংস্কার চেয়ে সেচ দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
পুরসা থেকে একটি সেচখাল বেরিয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উত্তরে ফাগুপুর হয়ে বর্ধমানের দিকে গিয়েছে। গলসি ২ ব্লকের গলসি কালীমতিদেবী হাই স্কুল সংলগ্ন এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়েছে ওই খালের একটি শাখা। সেটি দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে পেরিয়ে রাস্তার দক্ষিণ দিকে এসেছে। শাখা খালটির নাম 'ফোর-বি'। গলসির সারুল গ্রাম, ভূঁড়ি পঞ্চায়েতের উড়া, সাঁকো পঞ্চায়েতের বড়মুড়িয়া এবং সাটিনন্দী পঞ্চায়েতের চন্দনপুর হয়ে বর্ধমানের ফাগুপুরে যাওয়া খালটি প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ।
এলাকাবাসী জানান, খালটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বহু কৃষিজমিতে আমন আর বোরো দুই মরসুমেই ধানচাষের সময়ে জল যায় ওই খাল দিয়ে। সারুল গ্রামের বাসিন্দা শম্ভুনাথ রায় বলেন, “এক সময়ে এই খালের জলে সেচ দেওয়া হত। প্রয়োজনের অতিরিক্ত জল এই খাল দিয়ে বেরিয়ে যেত। কিন্তু এখন খালের অবস্থা খুবই খারাপ।’’ বাসিন্দারা দাবি, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণের কাজ চলার সময়ে সেচখালের বহু জায়গায় মাটি, পাথর ফেলা হয়েছে। তাতেই মজে গিয়েছে খাল। সেচের জল এখন আর পৌঁছয় না জমিতে। কৃষকদের আশঙ্কা, খাল মজে যাওয়ায় বর্ষার সময়ে বহু জমিতে জল জমে যাবে। ক্ষতি হবে তাঁদের। বাপ্পাদিত্য রায়, জাকির হোসেন শেখ, সঞ্জয় রুইদাসের মতো চাষিদের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন খালটির সংস্কার হয়নি। গত দু'বছর ধরে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ নির্মাণ সামগ্রী ফেলে খালটি নষ্ট করে দিয়েছে।’’
উড়া গ্রামের সুজিত সাম বলেন, “অনেক জায়গায় খালটি সম্পূর্ণ বুজে গিয়েছে। বহু জমিতেই আর চাষ হচ্ছে না। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’ গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হেমন্ত পালের দাবি, “ফোর বি ক্যানাল সংস্কারের জন্য সেচ দফতরকে চিঠি দিয়েছি। চিঠি দেওয়া হবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকেও। খালটির সংস্কার হলে চাষিরা উপকৃত হবেন।” এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (দামোদর ক্যানাল ডিভিশন, বর্ধমান) প্রণবকুমার সামন্ত বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)