আসানসোলের এই জমি নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
জমিটি ‘ব্যক্তিগত’ মালিকানাধীন বলে দাবি। জমিটির অধিকার পাওয়ার লক্ষ্যে আদালতে মামলাও হয়েছে। সে জমিই দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠল আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) র বিরুদ্ধে! আসানসোলের নডিহার ঘটনা। শনিবার ৩০ বিঘা জমিতে সীমানা পাঁচিল তোলার তোড়জোড় করে এডিডিএ। এলাকাবাসীর বাধায় সে কাজ করা যায়নি। যদিও, এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের প্রস্তাব মতো জমিতে খেলার মাঠ করতে ও সীমানা পাঁচিল দিতে পদক্ষেপ করা হয়। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলেও, মলয়ের ফোন বন্ধ ছিল। রাত পর্যন্ত জবাব মেলেনি মেসেজেরও।
এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল পুরনিগমের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নডিহা মৌজায় ৩০ বিঘা ফাঁকা জমি আছে। সেখানেই খেলার মাঠ তৈরির প্রকল্প নেয় এডিডিএ। শনিবার ছিল পাঁচিল তোলার কাজের শিলান্যাস কর্মসূচি। প্রকল্পটির জন্য খরচ ধরা হয়, প্রায় ২৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। শনিবারের এই কর্মসূচির জন্য বোর্ডও বসানো হয়। তাতে প্রধান অতিথি হিসেবে মলয়ের থাকবেন এবং শিলান্যাস করবেন তাপস, এমনটা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সকালে শিলান্যাস কর্মসূচির তোড়জোড় শুরু হওয়ার পরেই বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, জমিটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। রাজ্য সরকারের বা খাস জমি নয়। এডিডিএ জমি দখল করছে। ইতিমধ্যে প্রদীপ মিশ্র নামে এক জন সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে নিজেকে জমির মালিক পরিচয় দিয়ে দাবি করেন, “জমিটি আমাদের। সেন-র্যালে কারখানাকে সম্প্রসারণের কাজের জন্য জমিটি লিজ় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কারখানার সম্প্রসারণ না হয়ে, বন্ধ হয়ে যায়।” তাঁর সংযোজন: “১৯৯২-এ কারাখানার সম্পত্তি আদালতের মাধ্যমে ‘লিকুইডেশনে’ গিয়েছে। জমি ফেরত পেতে চেয়ে হাই কোর্টে মামলা করেছি। সেই মামলা এখনও চলছে। বিচারাধীন এই ভূসম্পত্তি জোর করে অবৈধ উপায়ে দখল করতে এসেছে এডিডিএ।”
আর এক বাসিন্দা মধুসূদন মিশ্র জানান, এই জমিতে লাগোয়া কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা নানা অনুষ্ঠান করেন। এ ভাবে জমি দখল করতে দেওয়া হবে না। গ্রামবাসীর প্রবল বাধায় শেষমেশ শিলান্যাস অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। তবে অনুষ্ঠান উপলক্ষে মলয় বা তাপস, কেউই এলাকায় আসেননি।
বিষয়টি নিয়ে তাপসের অবশ্য বক্তব্য, “প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় এডিডিএ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করছে। সে জন্য স্থানীয় বিধায়কদের কাছে প্রস্তাব চাওয়া হয়। তাই আসানসোল উত্তর বিধানসভা এলাকাতেও কিছু টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। সেখানকার বিধায়ক ও মন্ত্রী মলয় ঘটকের প্রস্তাব মতো ওই জমিতে খেলার মাঠ ও সীমানা পাঁচিল তোলার তোড়জোড় করা হচ্ছিল।” তাপসের সংযোজন: “আমারা শুধু কাজটা করতে গিয়েছি। জমির চরিত্র আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আলাদা কোনও জায়গায় কাজটা করা যায় কি না, তা দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy