কৃষ্ণপুরে। নিজস্ব চিত্র
দাবি জানাতে গিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের স্টলের টেবিল, চেয়ারই উল্টে দিলেন দুই তৃণমূল নেতা। তা-ও সেটি ‘দুয়ারে সরকারের’ শিবিরে। শনিবার এমনই অভিযোগ উঠেছে কাঁকসার বিদবিহার পঞ্চায়েতের কৃষ্ণপুরে। বিদবিহার পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য স্বপন সূত্রধর এবং তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কাজল শেখের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা সামনে আসতেই বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল নেতাদের ‘দাদাগিরির’ খেসারত দিতে হচ্ছে এখন রাজ্য সরকারের দফতরগুলিকেও।
এ দিন কৃষ্ণপুরের ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির শুরু হতেই সমস্যা দেখা দেয় বিদ্যুৎ দফতরের স্টলে। অভিযোগ, সেখানে আচমকা হাজির হন স্বপন ও কাজল। তাঁরা বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের স্টল তুলে নিতে বলেন। স্বপনের দাবি, “আমার সংসদ এলাকায় শিবপুরের রায়ডাঙা পাড়ার অজিত বাগদি, সুকুমার বাগদি নামে দু’জন প্রায় পাঁচ মাস আগে দুয়ারে সরকার শিবিরে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ মেলেনি।” এ দিন সে দাবিই জানাতে যান বলে জানিয়েছেন স্বপন। পাশাপাশি, শিবিরে তাঁর ‘হুঁশিয়ারি’: “ওই দু’টি পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ দফতরের স্টল এখানে করা যাবে না। কর্মীদের তাই চলে যেতে বলা হয়!” এর পরেই তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কাজল টেবিল, চেয়ার উল্টে দেন, তা ছুড়ে ফেলে দেন।
এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ঘটনাস্থলে আসে কাঁকসা থানা। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিষয়টি নিয়ে ‘পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার’ ডিভিশনাল ম্যানেজার (দুর্গাপুর) সোহেল হাসান বলেন, “যাঁদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ, তাঁরা নতুন সংযোগের জন্য যে টাকা দেওয়া দরকার, তা দেননি। তাই সংযোগও মেলেনি।”
এ দিকে, পুরো বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির বর্ধমান (সদর) জেলা সহ-সভাপতি রমন শর্মার বক্তব্য, “এই দাদাগিরিটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। আসলে সব নেতাই নিজেদের বড় দেখাতে গিয়ে এমনটা ঘটান।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, “মানুষের ক্ষোভ সামাল দিতেই হয়তো ওই দু’জন এমনটা ঘটিয়েছেন। তবে এ ধরনের ঘটনা একেবারেই কাম্য নয়।” বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে, তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, “সম্পূর্ণ অনৈতিক কাজ। ওই দু’জনকে সতর্ক করা হয়েছে। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন তাঁরা। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy