Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Salanpur

জল-পথের বদলে রাস্তা দিয়ে ‘পাচার’

বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়দের দাবি, সালানপুর থানা এলাকার অদূরেই ঝাড়খণ্ডের মিহিজামে রয়েছে কয়লার দু’টি অবৈধ ডিপো।

অভিযোগ, এ ভাবেই নিয়ে যাওয়া হয় কয়লা। ডাবরে। নিজস্ব চিত্র।

অভিযোগ, এ ভাবেই নিয়ে যাওয়া হয় কয়লা। ডাবরে। নিজস্ব চিত্র।

উৎপল পাতর
সালানপুর শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:৪৯
Share: Save:

কিছু দিন আগেও পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুরের কালীপাথর ও বৃন্দাবনি থেকে বরাকর নদী নৌকায় করে ঝাড়খণ্ডে কয়লা পাচার হত বলে অভিযোগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির। তবে আপাতত, সিবিআই, সিআইডি-র তৎপরতায় সেই জলপথে পাচারের চিত্র দেখা যাচ্ছে না বলে দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। যদিও, বিজেপি, সিপিএম-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, সালানপুর থানার অন্তর্গত আছড়া, ডাবর-সহ কিছু এলাকায় অবৈধ খাদান থেকে ফের শুরু হয়েছে কয়লা ‘পাচার’। মূলত সড়ক পথেই তা পৌঁছে যাচ্ছে ঝাড়খণ্ডের মিহিজামে। অভিযোগ মানেনি পুলিশ।

বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়দের দাবি, সালানপুর থানা এলাকার অদূরেই ঝাড়খণ্ডের মিহিজামে রয়েছে কয়লার দু’টি অবৈধ ডিপো। তাঁদের দাবি, ‘‘সালানপুরের ডাবর, রাঙ্গা, সামডি, গৌরাণ্ডি-সহ বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যা নামলেই দেখা যায়, অজস্র সাইকেল, মোটরবাইকে করে পুলিশের চোখের সামনেই কয়লার বস্তা নিয়ে ঝাড়খণ্ডের দিকে চলেছেন অনেকেই।’’ অবৈধ কয়লার কারবার বন্ধের দাবিতে গত ১০ জানুয়ারি সিপিএম বাইপাস লাগোয়া চৌরঙ্গি মোড়ে অবরোধও করেছিল।

তা হলে পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় পুলিশি নজরদারির কী পরিস্থিতি? বিজেপি, সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, রূপনারায়ণপুরে পুলিশের অস্থায়ী পিকেট রয়েছে। কিন্তু কয়লার ‘অবৈধ’ কারবারিরা সে পথ না মাড়িয়ে কুসুমকানালি গ্রাম এবং বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা হিন্দুস্তান কেবল্‌সের রাস্তা ধরে ঝাড়খণ্ডে ঢুকে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কয়লার চোরা কারবারে যুক্ত এক জনের দাবি, ‘‘সব ‘সেটিং’ রয়েছে। নির্দিষ্ট দর, নির্দিষ্ট জায়গায় দেওয়া হয়। ফলে, ধরা পড়ার কোনও ভয় নেই।’’ ওই আরোহীদের একাংশ জানান, তাঁরা কয়লা কাটেন না। তার জন্য নির্দিষ্ট শ্রমিক রয়েছে। খাদান থেকে এই পরিবহণকারীরা ২৫-৩০ কেজির এক ঝুড়ি প্রায় ১১০-১২০ টাকায় কেনেন। তা বস্তাবন্দি করে, অথবা মোটরবাইকে লোহার খাঁচায় করে মিহিজামে পৌঁছে দেওয়া হয় কয়লা। সেখানে কুইন্টাল প্রতি দর মেলে ৩৪০ টাকা।

তবে সিপিএম নেতা অসীমবাবু, বিজেপি নেতা লক্ষ্মণবাবুদের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের প্রত্যক্ষ মদতেই কয়লার এই কারবার চলছে।’’ কুসুমকানালির বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ‘‘কয়লাবাহী মোটরবাইকের জন্য রাস্তায় বেরনোও দায় হয়ে পড়েছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে বারাবনির তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। দলের কেউ কোনও অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত নন।’’

এলাকায় অবৈধ কয়লার কারবারের কথা মানেনি পুলিশ, সিআইএসএফ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিশনারেটের কর্তারা উদাহরণ হিসেবে, গত ২০ ডিসেম্বর কালীপাথরে, ২২ ডিসেম্বর বৃন্দাবনি এলাকায় অভিযান করার কথা জানান। কিন্তু সেখানে কয়লা বাজেয়াপ্ত না হওয়া ও কেউ ধরা না পড়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেন বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা। সালানপুর এরিয়ার সিআইএসঅফ-এর মোহনপুর ক্যাম্প ইনচার্জ বরুণ ত্যাগীও বলেন, ‘‘অবৈধ কয়লা ক্ষেত্রে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি যৌথ অভিযান চালিয়ে আছড়া থেকে ১০ টন ও ডাবর থেকে ১২ টন কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’ তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া জেলা পুলিশের এক কর্তা।

অন্য বিষয়গুলি:

coal Smuggling Salanpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy