বাবা বলেছিলেন, এমন কিছু করতে, যাতে দেশের মানুষ মনে রাখে। সে কথা মেনেই পঞ্চম শ্রেণি পাশ ছেলে বানিয়ে ফেললেন আস্ত একটা হেলিকপ্টার! তা-ও আবার নিজের গ্যারেজে বসেই এই কাজটা করে ফেলেছেন রেজাউল শেখ। পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাট থানার ঘোলা এলাকার বাসিন্দা তিনি। সাধারণ মানুষ যাতে হেলিকপ্টারে চড়তে পারে, তাই মন্ত্রীকে আবেদনও জানিয়ে রেখেছেন রেজাউল।

সব ঠিকঠাক চললে আর কিছু দিনের মধ্যেই আকাশে উড়বে রেজাউলের পাঁচ আসনের হেলিকপ্টার। এক-আধ দিনে স্বপ্ন সত্যি হয়নি তাঁর। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে এই নিয়ে গবেষণা করেছেন রেজাউল। ছ’মাস আগে লাখ লাখ টাকা দিয়ে কিনে এনেছেন যন্ত্রপাতি। এখন দিনরাত সেই যন্ত্রপাতি দিয়ে তৈরি করে ফেলেছেন হেলিকপ্টার। দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয়রা।

পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন রেজাউল। এখন গ্যারেজে কাজ করেন। তাঁর নিজের একটি জেসিবি মেশিনও রয়েছে। সে কারণে গাড়ির ইঞ্জিনের বিষয়ে তাঁর যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে। যদিও কপ্টার তৈরির কোনও প্রশিক্ষণ তাঁর ছিল না। তবু দমেননি। নিয়মিত পড়াশোনা করে গিয়েছেন। রেজাউলের দাবি, স্বপ্নটা দেখতে তাঁকে শিখিয়েছেন তাঁর বাবা। তিনি বলেছিলেন, এমন কিছু করতে, যাতে দেশের লোক মনে রাখে। বাবার কথা মেনেই বাড়ির সামনে খোলা জায়গাতেই শুরু করেন কপ্টার তৈরির কাজ। জানিয়েছেন, কাজ শেষ করতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে। দৈর্ঘ্যে এই কপ্টার ৪০ ফিট। তাতে বসতে পারবেন চালক-সহ পাঁচ জন।

রেজাউল জানিয়েছেন, লোহার পাত দিয়ে হেলিকপ্টারের কাঠামো তৈরি করেছেন। সেই কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। কাঠামোর মাথায় বড় ব্লেডের পাখাও লাগানো হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, “হেলিকপ্টার তৈরির কাজে এখনও পর্যন্ত ৪৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। কাজ শেষ করতে মোট ৬৫ লক্ষ টাকা খরচ হবে। তবে আমি আশাবাদী, আমার নিজের হাতে তৈরি হেলিকপ্টার সফল ভাবেই আকাশে উড়বে।’’

হেলিকপ্টার তৈরির কাজ দেখে রেজাউলের প্রশংসা করেছেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। হেলিকপ্টার তৈরি হয়ে যাওয়ার পর সাধারণ মানুষজন যাতে চাপতে পারেন, সে জন্য এখন থেকেই মন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে রেখেছেন রেজাউল।