প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আধিকারিকদের দাবি, শিশু শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলানোর ক্ষেত্রে কোথাও খামতি রয়েছে। পুরসভাগুলির পাল্টা দাবি, কোথাও কোনও খামতি নেই। এই পারস্পরিক দাবির মাঝে দাঁড়িয়ে কাটোয়া, দাঁইহাট, কালনা-সহ জেলার নানা প্রান্তে এই ধরনের শিশু শ্রমিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে আসা শিশু শ্রমিকদের বড় অংশই দু’বছরেরও বেশি সময় ভাতা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শিশু শ্রমিকদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ‘ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার প্রজেক্ট’-এর (এনসিএলপি) অধীনে এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলি তৈরি করা হয়। শহরের আয়তন, শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা অনুযায়ী এক থেকে আটটি পর্যন্ত শিশু শ্রমিককেন্দ্রগুলি খোলা হয়। সেই মতো বর্ধমান, গুসকরা, মেমারি, কালনা, দাঁইহাট, কাটোয়া পুরসভায় যথাক্রমে ছ’টি, চারটি, দু’টি, চারটি, একটি এবং পাঁচটি এমন কেন্দ্র খোলা হয়। ‘এনসিএলপি’র অধীনে থাকলেও পুরসভাগুলিই কেন্দ্রগুলি পরিচালনা করে। সেখানে শিশুদের পোশাক থেকে শুরু করে মিড-ডে মিল এবং যাবতীয় শিক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া হয়। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান মিলে এই ধরনের কেন্দ্রগুলিতে আসা শিশু শ্রমিকের সংখ্যা, ১,৪০০।
অভিভাবকেরা জানান, প্রতি মাসে আগে শিশু শ্রমিকদের দেড়শো টাকা করে ভাতা দেওয়া হতো। ২০১৮-র পরে তা হয় চারশো টাকা। এই ভাতা পেতে গেলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাকেন্দ্রে আসা শিশু শ্রমিকের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
কিন্তু গত দু’বছর ধরে শিশু শ্রমিকেরা ভাতা না পাওয়ায় শিশুশ্রম কত দূর রোখা যাবে তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট মহল। এক শিশু শ্রমিকের অভিভাবক বলেন, ‘‘ছেলেমেয়ে কাজে গেলে সংসারের সুরাহা হয়। কিন্তু তার পরেও আমরা প্রশাসনের কথা শুনে শিক্ষাকেন্দ্রে পাঠাই বাচ্চাদের। সেখানে ভাতা না মিললে সব দিকেই সমস্যা।’’ বিষয়টি নিয়ে কাটোয়া শহরের বাসিন্দা সমাজকর্মী প্রণবেশ সরকার বলেন, ‘‘শিশু শ্রমিকদের ভাতা এত দিন আটকে থাকাটা কাম্য নয়। পরিবারের অর্থনীতির হাল না ফিরলে শিশুশ্রম রোখার ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে পড়ব।’’
কেন্দ্রীয় ওই প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, দু’বছরে দুই বর্ধমানের শিক্ষাকেন্দ্রগুলির জন্য এক কোটি আট লক্ষ টাকার বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু টাকা বরাদ্দের পরেও কেন ভাতা মিলছে না? কেন্দ্রীয় ওই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা জানান, দিল্লি থেকে জানানো হয়েছে, শিশু শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি অথবা অ্যাকাউন্টের সঙ্গে নির্দিষ্ট কোনও নথি জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। তাই, ভাতা মিলছে না। তবে, জেলা চাইল্ড লেবার প্রজেক্ট ডিরেক্টর সন্দীপ পাণ্ডে বলেন, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত সমস্যা মিটবে।’’
যদিও পুরসভাগুলি জানায়, শিশু শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে সহায়তা করা হয়েছে। কোথাও কোনও অনিয়মও হয়নি। কাটোয়ার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, দাঁইহাটের পুরপ্রধান শিশির মণ্ডলদের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে টাকা না মেলায় খুবই অসুবিধা হচ্ছে। টাকার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে ফের আর্জি জানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy