এই বাড়িতেই শুক্রবার সিবিআই হানা দিয়েছিল। নিজস্ব চিত্র।
দোতলা বাড়িটা থেকে মেরেকেটে একশো মিটার দূরে একটি ক্লাব এবং অফিস। অন্য দিন, এখানে দেখা মেলে পেটানো চেহারার কয়েকজন যুবকের। শুক্রবার অবশ্য সবই খাঁ-খাঁ করছিল। কারণ, ওই যুবকেরা যাঁর অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত, সেই জয়দেব মণ্ডলের বাড়িতে সিবিআই হানা দিয়েছে। তবে অভিযানের খবর চাউর হতেই এলাকায় প্রায় সবাই মুখে কুলুপ এঁটেছেন। পাশাপাশি, জেলায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক গুঞ্জনও।
গত কয়েকমাস ধরে রাজ্যের নানা প্রান্তে অবৈধ কয়লার কারবারের অভিযোগকে কেন্দ্র করে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার নিতুড়িয়ার বাড়ি, অফিসে অভিযান হয়েছে। অভিযান হয়েছে আসানসোলের নরসমুদা এবং রানিগঞ্জের দু’জনের বাড়িতেও।
ঝাড়খণ্ডের নম্বর প্লেট দেওয়া একটি সাদা রংয়ের গাড়িতে করে এসে চার জন সিবিআই আধিকারিক এ দিন জয়দেবের আসানসোলের সেন-র্যালের বাড়িতে হানা দেন। খবর চাউর হতেই পাড়ার সকলের ‘নজর’ হয়ে দাঁড়ায় সবুজ-গোলাপি রংয়ের জয়দেবের বাড়িটি। দু’-এ কজন বাসিন্দাকে ইতিউতি ঘোরাফেরা করতেও দেখা যায়। তবে তাঁদের কেউই বিশেষ কথা বলতে চাননি। মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যায় জয়দেবের পড়শিদের বাড়ির দরজা-জানলাও। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বাসিন্দা, এক সিপিএম নেতা বলেন, ‘‘জয়দেবের কারবার সম্পর্কে এলাকার সবাই জানেন। তাঁর বাড়িতেও যে সিবিআই হানা দেবে, এ আর আশ্চর্য কী!’’ যদিও এলাকায় ‘জয়দেবের অনুগামী’ বলে পরিচিত এক জনের মন্তব্য, ‘‘দাদার বাড়িতেও সিবিআই হানা দেবে, এমন আশঙ্কা থাকলেও, সেটা যে হবেই, ভাবতে পারিনি।’’
যদিও এই ‘অভিযান’ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘তৃণমূলের পৃষ্ঠপোষকতায় জয়দেবের উত্থান। এখন সিবিআই ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কয়লার কারবার বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছেন। তৃণমূলের নেতারাও হাঁসফাঁস করছেন।’’ কন্যাপুর ফাঁড়ির ঠিক উল্টো দিকে জয়দেব মণ্ডলের ওই বাড়ি। সেই প্রসঙ্গ তুলে সিপিএম নেতা গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের টিপ্পনী: ‘‘পুলিশের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন অবৈধ কারবার চালিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী, এমনই এলাকায় সবাই বলাবলি করেন। তৃণমূলের মদত না থাকলে এমনটা হত না।’’ যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘অবৈধ কয়লার কারবার বেড়েছিল বাম আমলে। আমাদের আমলে তা বন্ধ। কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে সব সময়। আইন আইনের পথেই চলবে।’’
তবে এ দিন তল্লাশিতে কী মিলেছে, তা বলেননি সিবিআই কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy