কয়লা চুরির মামলার শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ হল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে। আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায়, ইসিএলের নিরাপত্তা আধিকারিক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। সাক্ষ্য দেন সংস্থার এক প্রাক্তন জিএম। প্রায় দেড় ঘণ্টা সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব চলে। অভিযুক্ত ৪৯ জন আদালতে হাজিরা দেন। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেছেন আগামী ২৯ মার্চ।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায়, সংস্থার আর এক নিরাপত্তা আধিকারিক রিঙ্কু বেহেরার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগেরও সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল এ দিন। কিন্তু ওই অভিযোগের তদন্ত চালানোর জন্য সংস্থার পক্ষ থেকে যিনি অনুমতি দিয়েছিলেন, তিনি মারা যাওয়ায় ওই সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। এ দিন সাক্ষ্যগ্রহণের আগে নতুন সাক্ষীর নাম, পেশা, বয়স সব খুঁটিয়ে জেনে নেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। ওই জিএম আদালতে জানান, সিবিআইয়ের কাছ থেকে রিপোর্ট ও এফআইআর কপি পেয়ে তিনি ইসিএলের ভিজিলেন্স দফতরের পরামর্শ মেনে দেবাশিসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ করেছেন। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী শেখর কুন্ডু সাক্ষ্য দিতে আসা জিএমের কাছে জানতে চান, দেবাশিসের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর অনুমতিপত্রে তাঁকে যে এক জন ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তা কি ঠিক? শেখর উল্লেখ করেন, দেবাশিস ইসিএলের এক জন সাধারণ কর্মচারী। ‘ন্যাশনাল ওয়েজ় বোর্ডের’ সিদ্ধান্ত মতো বেতন পান। দেবাশিস পাবলিক সার্ভেন্ট কি না, বিচারক নিজেও জিএমের কাছে সেই প্রশ্ন করেন। জিএম জানান, তিনি এই মুহূর্তে জানানোর মতো অবস্থায় নেই যে, দেবাশিস পাবলিক সার্ভেন্ট কি না। এ দিন সাক্ষ্যগ্রহণ পর্বে সাক্ষীর কাছে প্রায় ১৩টি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়।
এই মামলায় ১২ জন ইসিএলের কর্মী-আধিকারিকের বিরুদ্ধে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। গত বছর ১০ ডিসেম্বর এই চার্জশিট জমা করা হয়। প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ হয় ২১ জানুয়ারি। ওই দিন ইসিএলের প্রাক্তন ডিরেক্টর (টেকনিক্যাল) সুনীলকুমার ঝা-সহ আট পদাধিকারীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। মামলার মূল অভিযুক্ত, নিতুড়িয়ার অনুপ মাজি ওরফে লালা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিশেষ সিবিআই আদালতে নিজের ২৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন পুনরায় চালু করে দেওয়ার আবেদন জমা করেন। তবে তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকালীন এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির লেনদেন আদালতে বন্ধ করার আবেদন করে সিবিআই। বিচারক তাতে অনুমতি দেন। এ বিষয়ে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী আগামী ৬ মার্চ শুনানির দিন স্থির করেছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)