আসানসোল বিশেষ সিবিআই আলাদতে অনুপ মাজি ওরফে লালা (বাঁ দিকে), অভিযুক্ত জয়দেব মণ্ডল (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র ।
আগামী ১৪ নভেম্বর কয়লা পাচার মামলার চার্জ গঠন করতে হবে, দিনক্ষণ বেঁধে দিলেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। শনিবার মামলার শুনানি-পর্বের শেষে বিচারক এই নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশ মেনে নেন সিবিআই এবং অভিযুক্তদের আইনজীবীরা। প্রথমে ঠিক ছিল এ দিনই চার্জ গঠন করা হবে। কিন্তু অন্যতম অভিযুক্ত দু’টি বেসরকারি সংস্থার ক্ষেত্রে মামলা সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এ দিন মামলার মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো চিঠিতে পদ্ধতিগত ত্রুটি নিয়ে বিচারকের প্রশ্নের মুখে পড়েন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
কয়লা পাচার মামলায় ৩ জুলাই তৃতীয় চার্জশিট জমা পড়ার পর থেকেই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী বারবারই সিবিআইকে চূড়ান্ত চার্জ গঠন করার জন্য নির্দেশ দিতে থাকেন। ৯ অগস্ট মামলার শুনানিতে অনুপস্থিত ছিলেন বিচারক। ফলে ওইদিন শুনানি হয়নি। শনিবার শুনানি পর্বের শুরুতে মামলার দ্বিতীয় চার্জশিটে অভিযুক্ত দু’টি বেসরকারি সংস্থার আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলদের মামলায় যুক্ত করা উচিত নয় বলে প্রশ্ন তোলেন। ফলে নতুন করে মামলার বিষয়ে জটিলতা দেখা দেয়। তাই এ দিনও চার্জ গঠন করা সম্ভব হয়নি। বিচারক এর পরে জানান, চার্জশিটে অভিযুক্ত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একই দিনে এক সঙ্গে চার্জ গঠন করতে হবে। তাই দু’টি বেসরকারি সংস্থার জটিলতা আগে কাটাতে হবে। তিনি অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীদের কাছে আরও জানতে চান, মামলায় যুক্ত করা উচিত নয়— এমন আর কারও কোনও বক্তব্য আছে কি না। আইনজীবীদের তরফে তেমন কোনও বক্তব্য না মেলায় বিচারক ২১ সেপ্টেম্বর ওই দুই বেসরকারি সংস্থার মামলা সংক্রান্ত জটিলতা নিষ্পত্তির দিন ঘোষণা করেন। তার পরে ১৪ নভেম্বর চূড়ান্ত চার্জ গঠন করতেই হবে বলে জানান। তাঁর নির্দেশে সহমত জানান সিবিআই এবং অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা।
এ দিন অনুপ মাজি ওরফে লালার আইনজীবী অভিষেক মুখোপাধ্যায় আবেদন করেন, এখনও সিবিআই তাঁর মক্কেলকে যখন-তখন ডেকে পাঠাচ্ছে। বিচারক তখন জানান, মামলার তদন্ত এখনও চলছে। তাই সিবিআই ডাকতেই পারে। কিন্তু তাঁকে নোটিস পাঠিয়ে ডাকা হচ্ছে, নাকি ফোনে ডাকা হচ্ছে, তা জানতে চান। অভিষেক জানান, তাঁর মক্কেলকে ৩০ অগস্ট ই-মেল পাঠিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর নিজাম প্যালেসে ডাকা হয়েছিল। এ বার বিচারক সেই ই-মেল দেখতে চান। সেটি পড়ার পরেই তিনি অসন্তেষ প্রকাশ করেন। সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমারকে প্রশ্ন করেন, সাক্ষী না অভিযুক্ত, কী হিসেবে অনুপ মাজিকে ডাকা হয়েছে, সে সব উল্লেখ নেই চিঠিতে। এ ভাবে কি ডাকা যায়? বিচারকের এই প্রশ্নের উপযুক্ত কোনও জবাব সিবিআইয়ের তরফে মেলেনি।
২০১৮ সালের গোড়া থেকে কয়লা পাচার মামলার তদন্তে নামে সিবিআই। প্রথম এফআইআর হয় ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর। তাতে মূল অভিযুক্ত করা হয় পুরুলিয়ার ভামুরিয়ার বাসিন্দা লালাকে। সঙ্গে ইসিএলের দুই জেনারেল ম্যানেজার, এক জন নিরাপত্তা আধিকারিক ও দুই নিরাপত্তাকর্মীর নাম এফআইআরে যুক্ত করা হয়। এখনও পর্যন্ত তিনটি চার্জশিট জমা পড়েছে। অভিযুক্তের সংখ্যা ৫০। তাঁদের মধ্যে প্রাক্তন তৃণমূল যুব নেতা বিনয় মিশ্র পলাতক। ইসিএলের এক নিরাপত্তাকর্মী মৃত বলে জানানো হয়েছে। চার্জ গঠনের আগে বিনয় মিশ্রকে ‘ফাইল ফর প্রেজেন্স’ দেখানো হবে বলে বিচারক জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy