বার্নপুরে রাস্তার ধারে জমে খাটালের আবর্জনা। —নিজস্ব চিত্র।
ডেঙ্গি পরিস্থিতি আসানসোল পুরসভা এলাকায় উদ্বেগজনক, তা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এই পরিস্থিতিতে কল্যাণপুর, বার্নপুর-সহ শিল্পাঞ্চলের নানা এলাকায় থাকা খাটালগুলি থেকে ছড়ানো দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই খাটাল নিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে সর্বদল বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস পুন্নমবলমও বলেন, “খাটাল নিয়ে অভিযোগ এসেছে। কী করা যায়, তা ভাবছি।”
দৃশ্য ১: আসানসোলের কল্যাণপুর সরকারি আবাসন লাগোয়া শ্রীনগর অঞ্চল। রাস্তার এক পাশে রয়েছে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আবাসন কলোনি। আর এক দিকে আছে প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা জুড়ে গরু-মোষের খাটাল। যাতায়াতের এক মাত্র রাস্তাটি গোবরের স্তূপে ভরে আছে। নর্দমা উপচে খাটালের আবর্জনা মিশ্রিত জল রাস্তা দিয়ে বইছে। নাকে রুমাল চাপা দিয়েই যাতায়াত করছেন পড়ুয়া ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
দৃশ্য ২: বার্নপুরের রাধানগর আট নম্বর লাগোয়া নিউটাউন এলাকা। রাস্তার এক পাশে রয়েছে ইস্কোর কর্মী আবাসন অঞ্চল। মাঝের অংশে প্রায় ১০০ মিটার বিস্তীর্ণ এলাকায় রয়েছে একাধিক খাটাল। খাটালের পাশে রয়েছে একটি কলোনি। কার্যত গোবর ও খাটালের নোংরা জল ডিঙিয়ে রাধানগর, নিউটাউনের রাস্তা ধরে যাতায়াত করতে হয় বাসিন্দাদের।
শুধু এই দুই এলাকাই নয়। আপকার গার্ডেন, রেলপাড়, ইসমাইল, উষাগ্রাম-সহ কুলটি, নিয়ামতপুর, রানিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায়ও একই চিত্র নজরে আসবে বলে জানিয়েছেন ওই সব এলাকার বাসিন্দারা।
এ দিকে, আসানসোলে ডেঙ্গির ‘বাড়বাড়ন্ত’ নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর, জেলা প্রশাসন এমনকি, পুর-কর্তৃপক্ষ ঘন ঘন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করছেন। এরই মাঝে শহর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই খাটালগুলি থেকেও লাগামছাড়া দূষণ ছড়াচ্ছে বলে মনে করেছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের ১০৬টি ওয়ার্ডের কোথায় কতগুলি খাটাল আছে, তার নির্দিষ্ট কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। যদিও, কর্তৃপক্ষের প্রথমিক পর্যবেক্ষণ, ১২১টি খাটাল রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, “খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করে। সমস্যা মেটাতে কী পদক্ষেপ করা যায়, একটি সর্বদল বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেব। সবাইকে সঙ্গে নিয়েই সমাধানের রাস্তা বেরোবে।”
তবে বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির দাবি, “বর্তমান বোর্ডের নেতারা পরিকল্পনাবিহীন কাজ করেন। আমার সময়ে খাটাল লাগোয়া এলাকার সাফাই ও নিকাশির দায়িত্ব খাটাল মালিকেরাই নিয়েছিলেন। এ খন সে সব উঠে গিয়েছে।” কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা গোলাম সরওয়ারের মন্তব্য, “সমস্যাটি খাটাল মালিকদের বোঝাতে পারলে, তার সমাধান হবে। কিন্তু বর্তমান বোর্ডের শাসক নেতারা জন-সম্পর্কের কাজই করেন না।” বিরোধীদের মন্তব্য প্রসঙ্গে বিধান বলেন, “ওঁরা সব সময় বিরোধিতা করেন। সর্বদল বৈঠকে এসে নিজেদের সুচিন্তিত ও গঠনমূলক মতামত দিন। তার পরে দেখা যাবে।”
শ্রীনগরের এক খাটাল মালিক প্রভূ যাদব জানান, তাঁরাও শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সাহায্য করবেন। পুর-কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন। কিন্তু তাঁদের উচ্ছেদের পরিকল্পনা হলে,
বিরোধিতা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy