Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

‘নগদের অভাব’, প্রভাব ধনতেরসে

বুধবার থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি, সোনা-রুপোর দর গত ১৫ দিন ধরেই বেশ চড়া ছিল।

আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:১৮
Share: Save:

ঝিম ধরা অর্থনীতি। অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, জনসাধারণের হাতে ‘অতিরিক্ত টাকা’ এবং ‘নগদের’ অভাব রয়েছে। এই পরিস্থিতি এবং টানা বৃষ্টির প্রভাব শুক্রবার জেলায় ধনতেরসের বাজারেও পড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ক্রেতাদের দেখা মিললেও অন্য বছরের তুলনায় সংখ্যা বেশ কম বলে জানান তাঁরা।

বুধবার থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি, সোনা-রুপোর দর গত ১৫ দিন ধরেই বেশ চড়া ছিল। তবে বৃহস্পতিবার যেখানে মজুরি-সহ হলমার্ক সোনার গয়নার দাম ছিল ৪১ হাজার টাকার আশপাশে (১০ গ্রাম), শুক্রবার তা ৩৯ হাজারের আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। এই পরিস্থিতিতে সকাল থেকে ক্রেতারা দোকানে এসেছেন বলে জানান আসানসোলের একটি অভিজাত সোনার দোকানের মালিক সুদীপ রায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আবহাওয়া খারাপ থাকায় চিন্তা বেড়েছিল। কিন্তু শুক্রবার দর খানিকটা কমায় ক্রেতারা উৎসাহী হয়েছেন।’’ তবে বিক্রি হলেও গত বছরের তুলনায় তা বেশ কম, দাবি আসানসোলের বিশিষ্ট গয়না ব্যবসায়ী সুদর্শন দাস। তাঁর কথায়, ‘‘বাজার আশানুরূপ জমেনি।’’

উনিশ-বিশ একই ছবি দুর্গাপুরেও। এখানে ব্যবসায়ীদের অভিজ্ঞতা, অন্য বছরগুলিতে ধনতেরসের সময় বিকেল থেকে গয়নার দোকানে কার্যত পা রাখার জায়গা থাকে না। এ বার সেই পরিস্থিতি নয়। দুর্গাপুরের এক বিশিষ্ট গয়না ব্যবসায়ী জানান, ধনতেরসের প্রচার, ‘ছাড়’-সহ বিপণনে কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু তার পরেও বাজার জমেনি।

কিন্তু কেন এই হাল? সুদর্শনবাবু এককথায় সাধারণ মানুষের আর্থিক দুরবস্থা, খারাপ আবহাওয়াকেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন। দুর্গাপুরের বেনাচিতি স্বর্ণশিল্পী সমিতি সম্পাদক চন্দন দাস আবার এই দু’টি কারণ ছাড়াও সোনার দরকেও দায়ী করেছেন। তাঁর মতে, গত তিন মাসের তুলনায় চলতি সময়ে সোনার দর পাঁচ-ছ’হাজার টাকা বেশি হওয়ায় সোনায় ‘বিনিয়োগে’ অন্য বারের মতো আগ্রহ দেখা যায়নি।

পাশাপাশি, বিক্রি কমার কথা জানিয়েছেন জেলার ছোট ব্যবসায়ীদের একাংশও। আসানসোলের রাহা লেনের এক ব্যবসায়ীর বলেন, ‘‘বিক্রি গত বছরের তুলনায় কম হয়েছে। যাঁরা গয়না কিনেছেন, তাঁরাও কিস্তিতে টাকা মেটাবেন।’’

এই পরিস্থিতির ব্যাখ্যায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক ভাস্কর গোস্বামী বলেন, “দৈনন্দিন খরচ চালিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে অতিরিক্ত টাকা নেই। সে জন্য সোনার দোকানেও ভিড় হালকা।’’

এই ‘হালকা’ ভিড়েও যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সোনা কেনার মধ্যেও কয়েকটি প্রবণতা দেখছেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক পরিমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ব্যাঙ্ক, বিমা সংস্থার সুদ কমা, বাজারের অনিশ্চয়তার বদলে ‘লগ্নি’র জন্য জনসাধারণের একাংশ সোনাকে বেছে নিচ্ছেন। তা ছাড়া ‘গোপনে স্থায়ী সম্পদ বৃদ্ধি’-ও সোনা কেনার অন্যতম উদ্দেশ্য বলে মনে করেন তিনি।

তবে ঝিমিয়ে থাকা বাজার ‘স্লগ ওভারে’ অর্থাৎ শনিবার বিকেল পর্যন্ত উঠবে বলে আশা ব্যবসায়ী সুদর্শনবাবু, সমিতির সম্পাদক চন্দনবাবুদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Dhanteras Kali Pujo 2019 Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy