Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Businessmqan

পাওনা টাকা আদায়ে গিয়ে ‘খুন’ ব্যবসায়ী

ওই যুবকের বাড়ি সালার থানা এলাকায়। সালারের বড় বাজারে তাঁর একটি দোকান রয়েছে। তিনি পোশাক পাইকারি ও খুচরো হিসেবে বিক্রি করতেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
সালার ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২০ ০২:০৬
Share: Save:

পাওনা টাকা আদায়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। ১২ ঘণ্টা পর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হল এক ব্যবসায়ীর। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মোল্লা সাব্বির মওলা (২২)। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তাঁকে খুন করা হয়েছে। পরিবারের তরফে অবশ্য এদিন রাত পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।

ওই যুবকের বাড়ি সালার থানা এলাকায়। সালারের বড় বাজারে তাঁর একটি দোকান রয়েছে। তিনি পোশাক পাইকারি ও খুচরো হিসেবে বিক্রি করতেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলে পাওনা আদায়ের কথা জানিয়ে বাড়ি থেকে মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে ছিলেন সাব্বির। বলে যান, সালারের চুনশহর এবং সালিন্দায় যাবেন। সালার থেকে ওই দুই এলাকার দূরত্ব চার কিমি। কিন্তু বহুক্ষণ কেটে যাওয়ার পরেও তিনি বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েন। এর মধ্যে একবার বাড়ির লোকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন ওই যুবক।

তখন তিনি দ্রুত ফেরার কথা বলেন। তারপর অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি না আসায় পরিবারের লোকজন তাঁকে ফের ফোন করেন। ফোনটি বেজে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ফোনটি ‘সুইচড অফ’ হয়ে গিয়েছিল বলে দাবি পরিবারের। ওই রাতেই সালার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে সাব্বিরের পরিবার। পুলিশ রাতে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পায়নি। এদিন সকালে জানা যায়, সালার থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে কেতুগ্রাম থানা এলাকার মৌগ্রামে ভাগীরথীর পাড়ে তাঁর দেহ পড়ে রয়েছে। পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে দেহ শনাক্ত করেন। কেতুগ্রাম থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

ওই যুবকের আত্মীয় জামাল কাজি এদিন বলেন, “কী কারণে সাব্বির খুন হল, বুঝতে পারছি না। চুনশহরে কারও কাছে টাকা পেত। সেখানে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল। অথচ, দেহ পাওয়া গেল পুরোপুরি উল্টো রাস্তায়। পুলিশ তদন্ত করুক।’’ স্থানীয় সূত্রে খবর, এক বছর আগে বাবার মৃত্যুর পর পারিবারিক পোশাকের ব্যবসার হাল ধরেছিলেন সাব্বির। এলাকায় মিশুকে বলেই তাঁকে সকলে চেনেন। কারও সঙ্গে তাঁর সম্প্রতি বিবাদ হয়েছে, এমনটাও পরিবারের লোকজন মনে করতে পারছেন না। তবে কী কারণে তিনি খুন হলেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

ব্যবসায়িক শত্রুতার পাশাপাশি ছিনতাইবাজদের খপ্পরে পড়ে খুন হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশের একটি সূত্রে খবর। কারণ, বাড়ি থেকে বেরনোর সময় মোটরবাইক এবং দামি মোবাইল সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে ছিলেন সাব্বির। কিন্তু যেখান থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখানে বাইক কিংবা মোবাইল মেলেনি। দেহে তল্লাশি চালিয়ে কোনও টাকাপয়সাও পাওয়া যায়নি। দেহ যেখানে পড়ে ছিল, তার থেকে কিছুটা দূরে মদের খালি বোতল উদ্ধার করে পুলিশ। ওই যুবকের মাসি মানসুরা বেগম বলেন, “যে বা যারাই করে থাকুক ওর পরিচিত এবং ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে আমার বোনপোকে।’’ পুলিশের অনুমান, ওই যুবকের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করার পাশাপাশি তাঁর চোখের কাছেও ধারাল অস্ত্র দিয়ে মারা হয়। পরে দেহ নদীর ধারে ফেলে দেয় দুষ্কৃতীরা। ভরতপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ আজহারউদ্দিন বলেন, “ভাল ছেলে। ব্যবসা নিয়েই থাকত। ওর এভাবে খুন হয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না।’’

মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, “ওই যুবকের মোবাইল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ফোনের কল ডিটেলস্ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশা করি, দুষ্কৃতীরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Businessman Salar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy