ঝুঁকি: ডিভাইডারের উপর দিয়েই পারাপার। ২ নম্বর জাতীয় সড়কে বর্ধমানের ফাগুপুরে। ছবি: উদিত সিংহ
দু’বছরের মধ্যে জেলার ‘ব্ল্যাক স্পট’ (অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ জায়গা) ১১ থেকে বেড়ে দাঁড়াল ৫২য়। ‘দুর্ঘটনা প্রবণ’ হিসেবেও আরও ৩২টি জায়গা চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
কিছুদিন আগেই জেলা ঘুরে দেখে গিয়েছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (ট্র্যাফিক) পীযূষ পান্ডে। জেলা পুলিশের দাবি, দুর্ঘটনা কমাতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও রাজ্যের পূর্ত দফতরের সঙ্গে পৃথক ভাবে পরিদর্শন করা হয়। কী কী পদক্ষেপ করা দরকার, তা বিস্তারিত জানিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে (এনএইচএআই) চিঠিও দেন পুলিশ সুপার। এনএইচএআই জানিয়েছে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ছ’লেনের কাজ শুরু হওয়ার মুখে। ওই কাজ হওয়ার সময় এই পদক্ষেপগুলিও করা হবে। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুর্ঘটনা রুখতে বেশ কিছু প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে ওই সব প্রস্তাব দ্রুত কার্যকর করার জন্যে বলা হয়েছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে এই জেলায় ৬৯৯টি দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় ৩৯৯ জনের, আহত হন ৫৯০ জন। এ বছরের প্রথম ছ’মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৪৮টি। মারা গিয়েছেন ১৪০ জন। আহত হয়েছেন ২৩৯জন। এই দু’বছরের দুর্ঘটনার হিসেবেই জেলা পুলিশ, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও পূর্ত দফতর যৌথ পরিদর্শন করে ৫২টি জায়গা অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসেবে বেছে নিয়েছে।
২০১৭ সালের হিসেবে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর গলসির পারাজ মোড়, গলসি মোড়, গলিগ্রাম মোড়-সহ পাঁচটি জায়গা এবং রাজ্য সড়কের উপর কাঁকসার ১১ মাইল, কাটোয়ার রামদাসপুর ও রায়নার মোগলমারি-সহ ৬টি জায়গা অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। এ বার জেলা প্রশাসনের কাছে পুলিশের (ট্র্যাফিক) দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই ১১টি জায়গা ছাড়াও গলসিরই পুরসা, সরুল, বর্ধমানের মেহেদিবাগান মোড়, নবাবহাট, ফাগুপুর, উল্লাস মোড়, কালনার ধাত্রীগ্রাম, কাটোয়ার গাঙ্গুলিডাঙা, কামাল, করজগ্রাম মোড়, কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড, আউশগ্রামের ভেদিয়া, গুসকরা, রায়নার বাঁকুড়া মোড়, মীরেপোতা বাজার-সহ ৫২টি জায়গাকে অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ ধরা হয়েছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর বর্ধমানের বেচারহাট, মেমারির পাল্লা রোড, জামালপুরের মাসুদা ব্রিজ, আউশগ্রামের এনএইচ (২বি)-র উপর বটগ্রাম, কয়রাপুর, বড়া চৌমাথা, মন্তেশ্বরের মালডাঙা, মাঝেরগ্রাম, কালনার নাদনঘাট, জালুইডাঙা-সহ ৩২টি জায়গা।
পুলিশের দাবি, প্রতিটি জায়গা ধরে কী কী করতে হবে তা রিপোর্টে বলা হয়েছে। গলসি এলাকায় চালকল থাকায় গাড়ির চাপ থাকে। ফলে বিভিন্ন মোড়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব, আলো লাগানোর কথা বলা হয়েছে। নবাবহাট, উল্লাস মোড়ে গাড়ির চাপ ও অবৈধ পার্কিং হয়, তার জন্য রয়েছে আলাদা প্রস্তাব। কালনার ধাত্রীগ্রাম চারটি রাস্তার সংযোগ। সেখানে রাস্তা চওড়া করা, স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাফিক সিগন্যালের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডেও যান নিয়ন্ত্রণের কথা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়াও দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে পাঁচ কিলোমিটার অন্তর গাড়ি রাখার জায়গা করা, চালকদের জন্যে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে অবৈধ ‘কাটিং’ বন্ধ করে, বিভিন্ন ‘কাটিং’য়ে ‘সোলার ব্লিঙ্ক’ বসানোর কথা।
জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, “দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে থাকা পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে দুর্ঘটনা কমানোর জন্যে সুরক্ষা কমিটি গঠন করার চিন্তাভাবনা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy