সাইকেলে রওনা দিচ্ছেন প্রসেনজিৎ স্বর্ণকার।। —নিজস্ব চিত্র।
বছর দুয়েক আগে তাঁর বোন খুন হয়েছিলেন। এখনও অভিযুক্ত স্বামী ধরা পড়েননি। নিখোঁজ তাঁর বোনের সন্তানেরাও। এ বার বোনের খুনের বিচার পেতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর থেকে কলকাতায় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন দাদা প্রসেনজিৎ স্বর্ণকার। মঙ্গলবার তিনি কলকাতার উদ্দেশ্যে সাইকেলে রওনা দিয়েছেন।
পরিবার সূত্রে খবর, দু’বছর আগে প্রসেনজিতের বোন খুন হন। পুলিশ-প্রশাসন থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সুবিচারের আর্জি জানায় পরিবার। এখনও অধরা প্রসেনজিতের বোনের স্বামী। খোঁজ মেলেনি ভাগ্নে-ভাগ্নিরও। সুবিচারের আশায় এ বার দুর্গাপুর থেকে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে সাইকেলে চেপে রওনা দিয়েছেন মৃতের দাদা। পরিবারের দাবি, ঘটনার পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁরা। সন্দেহভাজনের নাম দিলেও ঠিক মতো তদন্ত করেনি পুলিশ। প্রশাসনের কাছে বিচার চেয়েও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রেম করে বাবা-মায়ের অমতে দুর্গাপুরের রফিক আলমকে বিয়ে করেছিলেন উমা খাতুন। দুই শিশুসন্তানের মা ছিলেন উমা। বছর দুয়েক আগে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার অন্তর্গত অঙ্গদপুর এলাকায় উমার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযোগ, তার আগের দিন থেকে মৃতা উমার স্বামী পলাতক। পড়শিরা ফোন করে উমার পরিবারকে ওই কথা জানান। খোঁজ মেলেনি দুই শিশুরও। পরিবারের সন্দেহ, অঙ্গদপুর এলাকায় রফিকের দিদির বাড়ির এক পড়শি ছোটেলাল ও তাঁর স্ত্রী সবটা জানতেন। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশে জানানোর পর দু’এক বার জেরা করার পর থেমে যায় তদন্ত।
পরিবারের সন্দেহের তালিকায় ছিল ছোটেলালের নাম। পরিবারের অভিযোগ, ছোটেলালের পরিবারকে চাপ দিলে সব সত্যিটা জানা যেত। কিন্তু পুলিশ তা করেনি বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, উমার স্বামী কোথায় সেটা জানতেও পুলিশের গড়িমসি ছিল অনেক। মহকুমা প্রশাসন থেকে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের সর্বোচ্চ স্তরে অভিযোগ জানিয়েও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ। এর পর, মৃতার পরিবার আদালতে যায়। সেখানেও সুরাহা না হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সুবিচার চেয়ে লিখিত আর্জি জানায় উমার পরিবার। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি বলে তাদের দাবি। পরিবারের দাবি, ছোটেলাল টাকার লোভ দেখিয়ে এফআইআর তুলে নেওয়ার চাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা সেটা করেনি।
শেষ পর্যন্ত বিচার না পেয়ে এ বার দুর্গাপুরের কোকওভেন থানা এলাকায় নিজের আবাসন থেকে বোনের খুনের সুবিচার চাইতে সাইকেলে করে কলকাতার রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন উমার দাদা প্রসেনজিৎ। সমস্ত নথি নিয়ে বেরিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।
মেয়ের শোকে ব্রেন স্ট্রোকে অসুস্থ উমার বাবা। এক চোখে দৃষ্টিও হারিয়েছেন। মেয়েকে হারিয়ে অসহায় মা। চিন্তিত ছেলেকে নিয়েও। বোনের সুবিচারের আশায় প্রসেনজিতের উপর কোনও আঁচ আসবে না তো? এই আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে গোটা পরিবারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy