রেলগেটে লেগে ছিঁড়েছে ওভারহেড তার, বিপত্তি। নিজস্ব চিত্র
ব্যস্ত সময়ে রেলগেট পড়তে দেখলে তাড়াহুড়ো বেড়ে যায় যানবাহনের। যেনতেন প্রকারেণ গেট পড়ার আগেই ও-পারে পৌঁছনো চাই! সেটা করতে গিয়েই ফের কাটোয়ার রেলগেটে ধাক্কা দিল একটি ম্যাটাডর। সঙ্গে সঙ্গে ওভারহেড তার ছিঁড়ে থমকে গেল কাটোয়া-হাওড়া শাখার ট্রেন চলাচল। রেলের তৎক্ষণাৎ হস্তক্ষেপে ট্রেন চলাচলে দেরি হলেও কোনও ট্রেন বাতিল করতে হয়নি। তবে সোমবার ওই রেলগেট বিপত্তির জেরে যানজটে আটকে নাভিশ্বাস ওঠে শহরের বাসিন্দাদের।
ঘটনাটি ঘটে সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ। দিনের ওই সময়ে কাটোয়া থেকে বেরিয়ে বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাওয়ার যেমন ভিড়, তেমনই বাসস্ট্যান্ড থেকে কাটোয়া শহরে ঢোকার ভিড়ও যথেষ্ট। ডাউন ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরোবে বলে তখন ২২ নম্বর রেলগটটি পড়তে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময়েই আসবাব বোঝাই একটি ম্যাটাডর বাসস্ট্যান্ড থেকে শহরে ঢোকার সময়ে সজোরে ধাক্কা দেয় রেলগেটে। গেটের লোহার দণ্ড গিয়ে পড়ে ওভারহেড তারের উপরে। তার জেরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
সঙ্গে সঙ্গে বিকল্প স্লাইডিং গেট নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। আধ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে ইন্টারসিটি। হাওড়া লোকালগুলিও দেরিতে ছড়ে বলে জানান কাটোয়া স্টেশন কর্তৃপক্ষ। স্টেশন ম্যানেজার দিলীপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও ১, ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে শুধুই ডিজেল ট্রেন চলেছে বেলা সাড়ে বারোটা পর্যন্ত। সেগুলিও আধ ঘণ্টা করে দেরিতে ছাড়ছিল। কাটোয়া ঢুকতে দেরি হয় সকালের আপ হাওড়া ও ব্যান্ডেল লোকালগুলির।’’ ওভারহেড তার মেরামতি করার পরে দুপুরের দিকে ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হয়।
সপ্তাহের প্রথম দিনের ব্যস্ত সময়ে রেলগেটে দুর্ঘটনার জন্য যানজট চলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা। গেটের দু’দিকে স্টেশনবাজার চৌরাস্তা ও বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে মোটরবাইক, সাইকেল,ভ্যান, ট্রাক এবং অন্য গাড়ি। চালক পালিয়ে গেলেও আটক করা হয় ওই ম্যাটাডরটিকে। আরপিএফ সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
ওই রেলগেটটির গেটম্যান নির্মলচন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘গেট পড়তে দেখলেই যে কোনও গাড়ির জোর যেন বেড়ে যায়। ম্যাটাডরটিও তাড়াহুড়ো করে গেট পেরোতে গিয়েই ধাক্কা দেয়।’’ মাস চারেক আগে একই ভাবে মোটরভ্যানের ধাক্কায় ওভারহেডের তার ছিঁড়ে বিপত্তি ঘটেছিল এই রেলগেটে। রেলগেট লাগোয়া মাংসবিক্রেতা, ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী সঞ্জয় মাঝির কথায়, ‘‘রেলগেটে টুকটাক ধাক্কা লাগা যেন রোজামচা হয়ে গিয়েছে। উড়ালপুল না হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যা মিটবে না।’’
ব্যান্ডেল লোকালে চেপে রোজ সাহেবতলা, পূর্বস্থলীতে যান নিত্যযাত্রী সুমন বন্দোপাধ্যায়, সুদীপ পালেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘অফিস টাইমে এই হয়রানির জন্য এ দিন গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি হল। উড়ালপুল থাকলে যাত্রীদের এই নিত্য ভোগান্তি পোহাতে হত না।’’ রেল সূত্রের খবর, ওই রেলগেটটি দীর্ঘদিন ধরেই নড়বড়ে হয়ে রয়েছে। ফলে একটু ধাক্কা লাগলেই তা ভেঙে যায়। গেট পাল্টানো যায় কিনা সে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন কাটোয়া স্টেশনের সিগন্যাল ইনস্পেক্টর সুরজিৎ পাল। রেল ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে উড়ালপুল হওয়ার কথা কাটোয়ায়। এ বিষয়ে বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী। বছরখানেক পেরোলেও এ বিষয়ে কার্যত কোনও উদ্যোগই চোখে পড়েনি শহরবাসীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy