প্রতীকী চিত্র
গত মাসের শেষে সরকারি হাসপাতালে রক্তের অপচয় বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। হাসপাতালগুলিকে প্রতি মাসে রক্তের ‘অডিট’ করে স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়। এর সঙ্গেই বর্ধমান শহরের নার্সিংহোমগুলিকেও রক্তের গুণমান নষ্ট করা এবং ‘নেগেটিভ’ গ্রুপের রক্ত আটকে রেখে ব্যবসা করার অভিযোগ নিয়ে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য দফতর। একটি নার্সিংহোমকে ‘নেগেটিভ’ গ্রুপের রক্ত নিয়ে ব্যবসা করার অভিযোগে ‘শো-কজ়’ও করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, দু’টি বেসরকারি হাসপাতাল রক্ত মজুত করার অনুমোদন চেয়েছিল। তার ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি।
জেলায় রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুনেত্রা মজুমদার বলেন, “বর্ধমান ও কালনার নার্সিংহোমগুলিকেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে ক্রমাগত অভিযান চালাব। ডোমেস্টিক ফ্রিজে রক্ত রয়েছে দেখতে পেলে লাইসেন্স বাতিল করার কথাও বলা হয়েছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশাপাশি, সরকারি হাসপাতালে প্রায় রক্ত নষ্ট হওয়ার অভিযোগ আসে। তা রুখতেই প্রতি সপ্তাহে কত রক্ত নষ্ট হচ্ছে তার হিসেব রাখতে বলা হয়েছে। মাসের শেষে এ নিয়ে একটি রিপোর্ট পাঠাবেন ‘অডিট’-এর দায়িত্বে থাকা আধিকারিক। কেন রক্ত নষ্ট হচ্ছে, সেই কারণগুলি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘অডিট’ করবেন সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্ল্যাঙ্কের মেডিক্যাল অফিসার ইন-চার্জ। ‘অডিট’ ঠিক হচ্ছে কি না, নজরদারি চালাবেন ‘ব্লাড সেফটি’ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর। ব্লাড ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা জানান, অনেক সময় রোগীর প্রয়োজন না থাকলেও রক্তের ইউনিট বাড়িয়ে ‘রিক্যুইজ়িশন স্লিপ’ দেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা যে পরিমাণ লিখছেন তার থেকে কম ‘ইউনিট’ রক্ত মিলবে, আগে থেকে তা ধরে নিয়ে এমন লেখার প্রচলন রয়েছে। এ দিকে ভাঁড়ারে থাকলে পুরোটাই ব্লাড ব্যাঙ্ক দিয়ে দেয়। আর ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে এক বার রক্তের ব্যাগ বার হলে যেহেতু তা ফেরানো যায় না, ফলে অপচয় হয়। রোগীর অস্ত্রোপচারের সময় বাড়তি রক্তের ‘ইউনিট’ মজুত রাখার প্রবণতাকেও দায়ী করেছেন তাঁরা।
‘অপচয়’ রুখতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। ঠিক হয়েছে, ওয়ার্ডের ‘ডোমেস্টিক’ ফ্রিজে আর রক্ত রাখা হবে না। সেখানে রক্ত রাখলে গুণমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার রোগীর জন্য যত ইউনিট রক্তের চাহিদা থাকবে, তা এক সঙ্গে না দিয়ে টানা ২৪ ঘণ্টা ব্লাড ব্যাঙ্কেই ওই রোগীর নামে মজুত থাকবে। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, “রোগীর পরিজনদের হাতে ‘হোল্ডিং ব্লাড’ নামে একটি কার্ড দেওয়া হচ্ছে। রক্ত লাগবে এই মর্মে ওয়ার্ডের নার্সের লিখিত বক্তব্য এবং ওই কার্ড দেখিয়ে রোগীর নামে থাকা রক্ত নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিয়ে যেতে পারবেন তাঁরা।’’
সুনেত্রাদেবী বলেন, “মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারবাবুদেরও এ ব্যাপারে দায়িত্ব নিয়ে ‘হোল ব্লাডের’ বদলে রক্তের উপাদান দেওয়ার জন্যে রিক্যুইজ়িশন করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালে সে উপায় নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy