প্রতীকী ছবি।
এক তিরে দু’পক্ষকে ঘায়েল করার কৌশল যেন! পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে দলের ‘মুষ্টিভিক্ষা কর্মসূচি’তে গিয়ে বাম জমানায় খুন হওয়া তৃণমূল কর্মীদের পরিবারের দুর্দশার কথা সামনে আনছে গেরুয়া শিবির। এক সময়ে তৃণমূলের জন্য ‘বামেদের হাতে’ যাঁরা রক্ত ঝরিয়েছেন, শাসক দল বর্তমানে দলের সেই নিহত কর্মীদের পরিবারের থেকে দূরে সরে গিয়েছে—এটাই বিজেপির প্রতিপাদ্য। দলের নেতাদের আশা, এই প্রচারে তাঁরা এক সঙ্গে তৃণমূল ও বামেদের চোট দিতে পারবেন। যদিও দূরত্বের ‘তত্ত্ব’ মানতে নারাজ তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। পুরোটাই ‘বিজেপির অপপ্রচার’, দাবি তাঁদের। ‘অভিযোগ ভিত্তিহীন’, বলছেন বামেরাও।
২০০৭-২০১১ পর্যন্ত মঙ্গলকোটে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক খুনের ঘটনা ঘটে। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই সময়ে তাদের দলের ১১ জন কর্মীকে খুন করা হয়। হাত ও পায়ের শিরা কেটে খুন করা হয়েছিল বক্সীনগরের তৃণমূল কর্মী আলাউদ্দিন শেখকে। খেরুয়া গ্রামের তৃণমূল কর্মী মাখন মাঝির বাড়িতে বোমা ছোড়া হলে, মৃত্যু হয় তাঁর মা পূর্ণিমার। খুন করা হয়েছিল উত্তর ব্রহ্মপুর গ্রামের তৃণমূল কর্মী দিলীপ ঘোষকে। সব ক’টি ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছিল সিপিএম-এর বিরুদ্ধে।
পূর্ণিমার ছেলে মাখনের অভিযোগ, “বহু আশ্বাস পেলেও সামান্য পিওনের চাকরিটুকুও আমার জোটেনি। এখন কোনও রকমে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাই। সে দিন আমি প্রাণে বাঁচলেও, মাকে হারিয়েছি। অথচ, দল আমাদের কোনও খোঁজই রাখে না।”
ভাল্যগ্রাম অঞ্চল তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি দেবু ধাড়া এখন কার্যত ‘নিষ্ক্রিয়’। তিনি বলেন, “বাম জমানায় সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে ১১ জন তৃণমূল কর্মী খুন হন। মৃতদেহ নিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় মিছিলও করেন। দল তাঁদের শহিদ বলে সম্মান দিলেও নিহত পরিবারের কাউকেই চাকরি দেয়নি।” তাঁর আক্ষেপ, ‘‘গ্রামের শহিদ বেদিতে নির্দিষ্ট দিনে মাল্যদান করা হয়। তবে বছর তিনেক ধরে তৃণমূলের কেউই আসেন না।”
এই ক্ষোভকেই অস্ত্র করেছে বিজেপি। দলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সহ-সভাপতি তথা মঙ্গলকোটের নেতা রানাপ্রতাপ গোস্বামী বলেন, “তৃণমূল বেইমানের দল। তাই দুঃসময়ে সিপিএমের হাতে খুন হওয়া কর্মীদের পরিবারকে ভুলে গিয়েছে। এটা আমরা প্রচার করছি। ভাল ফলের আশাও করছি।”
মঙ্গলকোটের সিপিএম নেতা শাজাহান চৌধুরী অবশ্য বলেন, “সে সময় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন হত। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলত ওরা। বিজেপি ভিত্তিহীন কথা বলছে।”
মঙ্গলকোটের ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী বলেন, “বিজেপির অপপ্রচার মানুষ বিশ্বাস করে না। আমরা আজও শহিদ পরিবারগুলির পাশে রয়েছি। অনেককেই কাজ দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy