বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে গ্যামন ব্রিজ মাঠে শুভেন্দু অধিকারীর সভা করার কথা। অনুমতি না মেলায় তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
অতীতে এই মাঠে অন্য নানা দল সভা করেছে। কিন্তু শহরের গ্যামন ব্রিজ মাঠে তাদের সভা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডে (ডিপিএল) বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ওই মাঠে সভা করতে আসার কথা রয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। কিন্তু ডিপিএল মাঠে সভা করার অনুমতি দিচ্ছে না। ডিপিএল কর্তৃপক্ষের যদিও দাবি, যা করা হয়েছে তা সংস্থার নিয়ম মেনেই।
পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, বেহাল পরিষেবা, দ্রুত পুরভোট করানো, স্বচ্ছ নির্বাচন-সহ নানা দাবিতে দুর্গাপুরে সভা করতে চায় বিজেপি। গ্যামন ব্রিজ লাগোয়া মাঠে সভা করার জন্য ডিপিএলের কাছে অনুমতি চেয়ে ২৭ জুলাই আবেদন জানান দলের জেলা সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ডিপিএলের তরফে জানানো হয়, ডিপিএলের নিয়ম অনুযায়ী, ওই মাঠে এই ধরনের সভা করা যাবে না। এ দিনই চন্দ্রশেখর পাল্টা চিঠি দিয়ে দাবি করেন, এই মাঠে এর আগে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র, তৃণমূলের সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব রাজনৈতিক সভা করে গিয়েছেন। তাঁদের কোন ভিত্তিতে সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং এখন কেন বিজেপিকে সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না, সে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের নেতৃত্বে বুধবার বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা ডিপিএলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। ছিলেন চন্দ্রশেখর, দলের জেলা সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত প্রমুখ। পুলিশ তাঁদের গেটে আটকে দেয়। সেখানেই তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। লক্ষ্মণ দাবি করতে থাকেন, ‘‘আমাদের ভদ্রতাকে দুর্বলতা মনে করবেন না। দুর্নীতিতে ডুবে আছেন ডিপিএলের আধিকারিকেরা। আমরা চাইলে জোর করে ভিতরে ঢুকে যেতে পারি। কিন্তু তা করব না। আমাদের ১০ জন প্রতিনিধি ভিতরে যাবেন। গেট খুলে দিন।’’ শুভেন্দুর সভা ওই মাঠেই হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেন লক্ষ্মণ। পরে বিজেপির প্রতিনিধিরা ডিপিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের বক্তব্য জানান।
লক্ষ্মণ বলেন, ‘‘সভা করার অনুমতি চেয়ে নিয়ম মেনে ডিপিএল ও পুলিশকে চিঠি দিয়েছি ২৭ জুলাই। ডিপিএল বলেছে, সভার অনুমতি দেওয়া হবে না। পুলিশও টালবাহানা করছে। তবে আমরা ওই মাঠেই সভা করব। কারও ক্ষমতা থাকলে আটকে দেখান।’’ তাঁর দাবি, ওই মাঠে তৃণমূলের শীর্ষ নেতা ফুটবল প্রতিযোগিতার নাম করে সভা করবেন। তিনি বলেন, ‘‘শাসক দলের জন্য এক নিয়ম। আমাদের জন্য আলাদা নিয়ম। এটা চলবে না। আমাদের বলা হয়েছে, নিয়ম বছরখানেক আগে বদলেছে, তাই আর রাজনৈতিক সভার অনুমতি দেওয়া হবে না। কিন্তু সেটা আগে কেন জানানো হয়নি? এখন আর মাঠ বদলানো সম্ভব নয়।’’এই ঘটনায় তৃণমূলের যোগ রয়েছে দাবি করে তাঁর অভিযোগ, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী এসে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাবেন। তাই তৃণমূল ভয় পেয়েছে। তা আটকাতেই এই পন্থা। তবে বাধা পেলে ভয়ঙ্করপরিণতি হবে।’’
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘ভয় তো বিজেপি পেয়েছে।ডিপিএল অনুমতি কেন দেয়নি তা জানানোর পরেও, লোক হবে না বুঝে বাজার গরম করতে গিয়ে বিক্ষোভ করছে, জোর করে ওই মাঠেই সভা করবে বলছে।’’ ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র বলেন, ‘‘ডিপিএলের নিয়ম অনুযায়ী, পুজো, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি প্রয়োজনে ওই মাঠ ব্যবহার করা যাবে। ওঁরা যে উদ্দেশ্যে মাঠটি চেয়েছেন, আমাদের নিয়মের মধ্যে তা নেই। তাই কর্তৃপক্ষ অনুমতিদিতে পারেননি।’’
বিজেপির যদিও দাবি, ডিপিএলের তরফে মৌখিক প্রতিশ্রুতি মিলেছে। স্বাগতা বলেন, ‘‘তা আমার জানা নেই।’’ অতীতে ওই মাঠে রাজনৈতিক সভা প্রসঙ্গে স্বাগতা বলেন, ‘‘সেটা আগে হয়েছে। পরে নিয়ম বদলেছে।’’ ভবিষ্যতে ওই মাঠে কি কোনও রাজনৈতিক সভারই অনুমতি দেওয়া হবে না? তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে পারছি না। আমাদের নিয়ম অনুযায়ী, এই মুহূর্তে সেটা হচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy