n কেতুগ্রামে বিজেপির সভায়। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
এলাকায় বিজেপির সভায় আসতে পারেন সদ্য দলে যোগ দেওয়া নেতা শুভেন্দু আধিকারী, শোনা গিয়েছিল আগের রাতে। মঙ্গলবার দুপুরে কেতু্গ্রামের কান্দরার সভায় অবশ্য শুভেন্দু আসেননি। ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচিতে সেই সভা সরগরম হয়ে উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে পছন্দমতো মাঠে অনুমতি না দেওয়ার অভিযোগে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ নিয়ে ‘হুঁশিয়ারি’ও দিলেন পুলিশকে।
এ দিন কান্দরায় হাসপাতাল লাগোয়া জমিতে সভার আয়োজন করা হয়। বিজেপি সূত্রের দাবি, পাশের একটি বড় মাঠে তারা সভা করার অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তা দেয়নি। বক্তব্য রাখতে উঠেই দিলীপবাবু পাশের বড় মাঠে পুলিশ তাঁদের কর্মীদের পা দিতে বারণ করেছে অভিযোগ তুলে হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘আমাদের খেপিয়ে তুললে কপালে দুঃখ আছে। কর্মীরা হাতে বাঁশ তুলে নিলে বাবা বলেও ছাড়া পাবে না।’’ বিজেপির পূর্ব বর্ধমান (কাটোয়া) জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ আমাদের যে কোনও কর্মসূচিতেই বাধা দেয়। পাশের বড় মাঠে সভা করার অনুমতি দেয়নি। দলীয় নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি। তবে এ সব নিয়ে আমরা চিন্তিত নই।’’ কেতুগ্রাম থানার পুলিশ যদিও এই অভিযোগ মানতে চায়নি। পুলিশের দাবি, যেখানে সভা করতে চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল, সেখানেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।’’ বিজেপির দাবি, হাজার পাঁচেক লোক হয়েছিল। ছোট জায়গায় সভা হওয়ায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন অনেক কর্মী-সমর্থক। যদিও পুলিশের হিসেবে, প্রায় দু’হাজার লোক এসেছিলেন।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতেই কাটোয়া শহরে চলে আসেন দিলীপবাবু। শহরের একটি অতিথিশালায় রাতে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ বেরিয়ে শহরের একাংশ ঘুরে চৈতন্য মহাপ্রভুর দীক্ষাস্থল গৌরাঙ্গবাড়িতে প্রণাম করতে যান তিনি। তার পরে পুরসভার কাছে ‘চায়ে পে চর্চা’ কর্মসূচিতে যোগ দেন। দুপুর সওয়া ১২টা নাগাদ কান্দরায় যান। সঙ্গে ছিলেন দলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণবাবু, জেলা পর্যবেক্ষক সুবীর নাগ, রাজ্য যুব মোর্চার সম্পাদক সৌভিক রাহা প্রমুখ। কৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর কেতুগ্রামে আসার কথা ছিল। কিন্তু অন্য কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় তিনি এখানে আসতে পারেননি।’’
সম্প্রতি জেলার এক সাংসদ ও দুই বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এ দিন সভায় দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমরা বড় পরিবারে বিশ্বাস করি। আমাদের দলে প্রত্যেককেই স্বাগত। দলে এলে, সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। যোগ্যতা অনুসারে বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে মন্ত্রী করা হয়েছে।’’ কেন্দ্রের নানা প্রকল্প রাজ্য সরকার চালু করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। ধান, আলু বিক্রি করেও তৃণমূলের ‘কাটমানি’র জন্য কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না বলে তাঁর দাবি। তাঁর দাবি, ‘‘তিনতলা বাড়ির তৃণমূল নেতারা ঝড়ে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। এ বার সুখের দিন শেষ হতে চলেছে।’’ পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকদের তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘মানুষকে বিনা কারণে যাঁরা কষ্ট দিচ্ছেন, তাঁদের ছাড়া হবে না। প্রত্যেকের নামের তালিকা করা হচ্ছে। আপনাদের কপালেও কষ্ট জমা হচ্ছে। বাকি জীবন শান্তিতে থাকতে পারবেন না।’’ এ দিনের সভায় বিজেপিতে যোগ দেন কাটোয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কাশীনাথ পাল ও কেতুগ্রামের বেশ কয়েকজন।
কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘সন্ত্রাসের কেতুগ্রামে তৃণমূলের সরকারই শান্তি এনেছে। প্ররোচনামূলক কথা বলে এখন বিজেপি নেতারা এলাকা অশান্ত করতে চাইছেন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজ্যের সঙ্গে বঞ্চনা করছে, জনবিরোধী নীতি নিচ্ছে। তাই বিজেপি নেতাদের মুখে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ মানায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy