পাথর খাদানের শ্রমিকের সিলিকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা প্রশাসন চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে দাবি করলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। বৃহস্পতিবার ভর্তি এক জনকে দেখতে আসানসোল জেলা হাসপাতালে যান তিনি। সালানপুর ব্লকের বাসিন্দা ওই শ্রমিকের স্ত্রী ও মেয়ে দিন তিনেক ধরে প্রায় অভুক্ত অবস্থায় হাসপাতালের বাইরে থাকছেন বলে দাবি করেনঅগ্নিমিত্রা। তিনি এ দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন এবং আক্রান্তের স্ত্রী ও মেয়ের খাবারের ব্যবস্থা করেন বলে জানান। হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস শুধু বলেন, ‘‘এক জন আক্রান্ত ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর চিকিৎসা চলছে।’’
দিন কয়েক আগে সালানপুরে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের তরফে গঠন করা একটা বিশেষ দল। যদিও সেই দলের প্রতিনিধিরা দাবি করেছিলেন, তাঁরা সচেতনতা তৈরির জন্য অভিযান চালিয়েছেন। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন খাদানে মাস্ক ব্যবহার করা, গাছ লাগানো, শ্রমিকদের সুরক্ষার পদক্ষেপের কথা জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। সালানপুরের বরাভুই গ্রামের বাসিন্দা অমরনাথ মাহাতোর অভিযোগ, ‘‘এই গ্রামে বেশ কয়েক জন সিলিকোসিসে আক্রান্ত রয়েছেন। তার মধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে ৬-৭ জনকে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।’’
অগ্নিমিত্রা এ দিন দাবি করেন, সিলিকোসিস ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। বেশিরভাগ রোগীকে যক্ষ্মা আক্রান্ত বলে দাবি করা হচ্ছে, যাতে সরকারি ক্ষতিপূরণদিতে না হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। এই গাফিলতি নজরদারির জন্য শ্রম দফতরের কোনও উদ্যোগ নেই।’’
প্রশাসন যদিও কোনও কিছু ধামাচাপা দেওয়ার কথা মানতে চায়নি। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, সিলিকোসিস আক্রান্তদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। সালানপুর ব্লক থেকেই তা শুরু করা হয়েছে। আসানসোল জেলা হাসপাতালে ‘সিলিকোসিস মেডিক্যাল বোর্ড’ও তৈরি করা হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে বলে আশ্বাস।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)