প্রতীকী ছবি।
তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ ছিল। টাকা ফেরতের দাবিতে বাড়িতে ঢুকে ‘হামলা’য় রেহাই পায়নি বছর তিনেকের শিশু, বৃদ্ধাও। অভিযোগ, শিশুটিকে মারধর করা হয়। তার ঠাকুমাও অসুস্থ হয়ে অনাময় হাসপাতালে ভর্তি।
শুক্রবার মাঝরাতে ওই শিশুর জেঠিমা, মেমারির গোপগন্তার ১ পঞ্চায়েতের সদস্যা, বাহাবপুরের বাসিন্দা স্থানীয় ছয় বিজেপির ছয় কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। তাঁর দাবি, ‘‘তিন বছরের ছেলেকে খুন করার মতলবে আছড়ে ফেলছিল, আমার দেওর ধরে ফেলে।’’ বিজেপির দাবি, কাটমানির অভিযোগ আড়াল করতেই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তদন্তে যাওয়া পুলিশকর্মীদের একাংশেরও দাবি, অভিযোগে যতটা বলা হয়েছে ঘটনা ততখানি নয়। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে।’’
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দিকে দিকে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে নানা রকম ভুয়ো অভিযোগ আনা হচ্ছে। এটিও তেমন বিষয় কি না, দেখতে হবে। তবে ঘটনা যদি সত্যি হয়, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে।’’
শিশু, বৃদ্ধাকে মারধর ছাড়াও বাড়িতে ঢুকে এক তরুণীর শ্লীলতাহানি করা হয়েছে, দাবি করেছেন ওই পঞ্চায়েত সদস্যা। এ দিন বর্ধমান আদালতে তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেন বিচারক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের কাজল বাগ ও সুমি হাঁসদা পঞ্চায়েত সদস্যার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ করেন। ৪-৫ দিন আগে এ নিয়ে বিক্ষোভও হয় পঞ্চায়েতে ও ওই নেত্রীর বাড়িতে। এ দিন তাঁদের দাবি, কাজলের কাছ থেকে ২২ হাজার ও সুমির কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। মেমারি থানার দাবি, অভিযোগটি জেলাশাসকের ‘গ্রিভান্স সেলে’ পাঠানো হয়েছে।
ওই পঞ্চায়েত সদস্যা পুলিশকে জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে বিজেপি নেতা ভীষ্মদেব ভট্টাচার্য তাঁদের গ্রামে যান। তাঁর উস্কানিমূলক কথার পরেই ‘বিজেপি আশ্রিত দুর্ধর্ষ ব্যক্তিরা’ বাড়ি আক্রমণ করে। তাঁদের হাতে লোহার রড, চাকু, সাইকেলের চেন ছিল। হামলার ভয়ে ঘরে ঢুকে খিল লাগিয়ে দেন তিনি। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের রোষের মুখে পড়েন বাড়ির আবালবৃদ্ধবণিতা। কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ মানেননি তিনি।
ওই নেত্রীর এক জায়ের দাবি, “আমাদের মারধর করা হয়েছে। আমার ভাসুরঝিকে উঠোনে ফেলে অত্যাচার করা হয়েছে। আমার ১২ বছরের মেয়ের পায়েও লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। তাকে আটকাতে গিয়ে ছেলে ও শাশুড়ি মার খেয়েছেন। আমরা এখনও আতঙ্কে আছি।’’ আর এক জায়ের দাবি, আমার তিন বছরের ছেলে ঘরে ছিল। হঠাৎ তাকিয়ে দেখি সে বাড়ির উঠোনে পড়ে রয়েছে।’’ শনিবার সকালে বাবার কোলে চড়ে নিজের বাঁ গালে হাত দিয়ে শিশুটি বলে, ‘‘যারা ঝগড়া করতে এসেছিল, তারা চড় মেরেছে। ফেলে দিয়েছে। বাবা তুলেছে।’’
মেমারি ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মধুসূদন ভট্টাচার্য বলেন, “নেশাগ্রস্থ অবস্থায় বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়ে শিশুকে মারধর করা হচ্ছে। আক্রমণের হাত থেকে বৃদ্ধারাও বাদ যাচ্ছেন না। বাহাবপুরের ঘটনা এক কথায় অমানবিক।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা অভিযুক্ত নেতা ভীষ্মদেব ভট্টাচার্য বলেন, “শিশুর গায়ে কেউ হাত দেয়! কাটমানির ঘটনা আড়াল করার জন্যই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy