Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
BJP

লকডাউনের মাঝেই হল শোভাযাত্রা

রানিগঞ্জ, অণ্ডাল, জামুড়িয়া-সহ নানা এলাকায় মন্দিরে-মন্দিরে বিজেপি নেতৃত্ব পুজো করেন।

পাটমোহনায় বুধবার। নিজস্ব চিত্র

পাটমোহনায় বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২০ ০৬:১৮
Share: Save:

ঘোষণা ছিলই। সেই মতো বুধবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজো উপলক্ষে জেলার নানা প্রান্তে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করল বিজেপি। রাজ্যে ‘লকডাউন’-এর দিনে এই কর্মসূচির আয়োজনকে কেন্দ্র করে সুর চড়ছিল রাজ্য তথা জেলার রাজনীতিতে। বুধবার অবশ্য জেলায় কর্মসূচি হলেও কার্যত দেখা মেলেনি পুলিশ-প্রশাসনের, পর্যবেক্ষণ বিভিন্ন এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের একাংশের।

রানিগঞ্জ, অণ্ডাল, জামুড়িয়া-সহ নানা এলাকায় মন্দিরে-মন্দিরে বিজেপি নেতৃত্ব পুজো করেন। রানিগঞ্জের এগারা পঞ্চায়েতের কাঁকরডাঙা গ্রামে স্থানীয় হনুমান মন্দিরে পুজো শেষে ঢাক, ঢোল-সহ শোভাযাত্রার আয়োজন করে বিজেপি। তাতে অন্তত দেড়শো জন দলীয় কর্মী, সমর্থক ছিলেন বলে বিজেপি নেতৃত্বেরই দাবি। বিজেপি নেতা সন্দীপ গোপ বলেন, ‘‘৫ অগস্ট রাজ্য লকডাউন ঘোষণা করায় আমরা ধরেই নিয়েছিলাম মিছিলের অনুমতি মিলবে না। কিন্তু আমাদের মিছিল সফল করেছেন এলাকাবাসী। মিছিলে দূরত্ববিধি রক্ষিত হয়।’’

এ দিকে, পাণ্ডবেশ্বরে ‘হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’ বিভিন্ন মন্দিরে পুজোর পরে লাড্ডু বিতরণ করে। রামলালার পুজো, যজ্ঞ, ধর্মীয় মিছিল সবই হয়েছে আসানসোলেও। এখানেও কোথাও পুলিশকে দেখা যায়নি বলে দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। তবে প্রায় কোথাও বিজেপির দলীয় পতাকা দেখা যায়নি। আসানসোলের রামকৃষ্ণডাঙালে ম্যারাপ বেঁধে ভক্ত-সমাগম, আসানসোলের নুরুদ্দিন রোডে বিজেপি কার্যালয়ের সামনে রামের ছবিতে মালা পরিয়ে উল্লাস, শোভাযাত্রার আয়োজন দেখা যায়। এই অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন আসানসোল পুরসভার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর আশা শর্মা।

বার্নপুরের পুরানো হাটের একটি কমিউনিটি সেন্টারে রামলালার পুজো ও যজ্ঞানুষ্ঠানের আয়োজন করেন ভারতীয় জনতা যুবমোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যেরা। কুলটির পাটমোহনা কোলিয়ারি এলাকায় এ দিন তাসাপার্টি নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বার হয়। শোভাযাত্রার নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির যুবনেতা অমিত গড়াই। এ দিন ওই মিছিল থেকে যথেচ্ছ শব্দবাজিও ফাটানো হয় বলে এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ। বরাকরের দাসপাড়ায় ভক্তদের জন্য ছিল খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানোর ব্যবস্থাও।

তবে দুর্গাপুরে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাড়িতে পুজো করে দিনটি উদ্যাপন করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এই দলে ছিলেন দুর্গাপুরে বিজেপির জেলা কার্যকরী সমিতির সদস্য অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দুর্গাপুরের কয়েকটি মন্দিরে ও কাঁকসার কিছু এলাকায় এ দিন পুজো হয়েছে। কিন্তু মেনগেটের কাছে একটি পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, রীতিমতো সাউন্ড বক্স বাজিয়ে উৎসব চলছে। বিশাল গৈরিক পতাকা উড়ছে। বাড়ির দাওয়ায় চলছে আলপনা দেওয়ার পর্ব। ফাটছে পটকা। সঙ্গে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। এ ক্ষেত্রেও পুলিশের দেখা মেলেনি। কেন? মুখে কুলুপ এঁটেছেন পুলিশ-কর্তারা।

যদিও ‘লকডাউন’-এর মধ্যে শোভাযাত্রা, জমায়েত কী করে হল, সে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্তের প্রশ্ন, ‘‘ধর্মীয় বিষয় ব্যক্তিগত ভাবে মানুষ অবশ্যই পালন করবেন। কিন্তু এই প্রহসনের লকডাউনে পুলিশ-প্রশাসন কোথায় ছিল? তৃণমূল, বিজেপি— দু’দলেরই আসলে ‘গভীর সম্পর্ক’ রয়েছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘প্রশাসন খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করবে।’’ লকডাউনের মধ্যে রানিগঞ্জের মিছিল নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিডিও (রানিগঞ্জ) অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (সেন্টার ২) তথাগত পাণ্ডে বলেন, ‘‘এ নিয়ে কোনও অভিযোগ মেলেনি।’’ যদিও সামগ্রিক ভাবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি।

আর দিনের শেষে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘বুধবার রামলালার পুজো ও যজ্ঞানুষ্ঠানে শিল্পাঞ্চলের মানুষ সক্রিয় যোগ দান করেছিলেন। এটা মানুষের ভাবাবেগের বিষয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Bhoomipuja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy