Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Bhatar

বিক্ষোভের পরে ছাড় শ্রমিকদের, অভিযোগ ভাতারে

জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিভৃতবাস কেন্দ্রে রেখে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

ছবি রয়টার্স

ছবি রয়টার্স

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ০৪:৫৮
Share: Save:

পর্যাপ্ত পানীয় জল মিলছে না। খাবারের মানও ভাল নয়। এমনই নানা অভিযোগে রবিবার ভাতারের বিভিন্ন নিভৃতবাস কেন্দ্রে (‘কোয়রান্টিন সেন্টার’) থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ বিক্ষোভ দেখালেন। নানা এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্য অনুযায়ী, শেষমেশ, ‘প্রশাসনের নির্দেশে’ দুপুরে ওই কেন্দ্রগুলিতে থাকা শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই শ্রমিকদের অনেকেরই লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিভৃতবাস কেন্দ্রে রেখে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। নমুনা-রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মহারাষ্ট্র, গুজরাত ও দিল্লি থেকে আসা শ্রমিক ও বাসিন্দাদের নিভৃতবাস কেন্দ্রেই রাখা হবে।

ভাতারের এরুয়ার ভুবনমোহন দত্ত পাবলিক হাইস্কুল ও গেরুয়ার হংসেশ্বরী গার্লস স্কুলে মোট ২২৮ জন পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। যাঁদের অধিকাংশ মহারাষ্ট্র থেকে ভাতারে এসেছিলেন। বলগোনা সারদামণি বালিকা বিদ্যালয়ে ১৩৩ জন ও বনপাস শিক্ষা নিকেতনে ৯৮ জন পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। পাশাপাশি, ভাতার দাশরথি হাজরা মেমোরিয়াল কলেজেও পরিযায়ী শ্রমিকেরা ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল থেকেই ওই নিভৃতবাস কেন্দ্রগুলিতে শুরু হয় বিক্ষোভ। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নানা অভিযোগ তুলে দু’-একটি স্কুলে বেঞ্চ, দরজা ভাঙচুর করেছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ। শেষমেশ, কেন্দ্রগুলিতে থাকা শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের মানগোবিন্দ অধিকারী, বলগোনা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আমজাদ শেখ, নিত্যানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জুলফিকার আলি, ভাতারের পঞ্চায়েত প্রধান পরেশনাথ চক্রবর্তীদের। তাঁদের প্রত্যেকেরই দাবি, ‘‘ব্লক প্রশাসনের নির্দেশেই শ্রমিকদের ছাড়া হয়েছে।’’

বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন, বিষয়টা এমন নয়। মোট ৮৩৩ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করার পরে তাঁদের ছাড়া হয়েছে। তবে তাঁদের ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকতে হবে।’’ মহকুমাশাসক (বর্ধমান উত্তর) পুষ্পেন্দু সরকারকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম নিয়োগীর দাবি, “তামিলনাড়ু থেকে আসা শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়ার কথা হয়েছিল। বাকি জায়গা থেকে আসা শ্রমিকদের ছাড়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।’’ তবে ওই কেন্দ্রগুলিতে পরিকাঠামো ঠিক মতো ছিল কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন জনপ্রতিনিধিদের একাংশ। দাশরথি হাজরা মেমোরিয়াল কলেজে নিম্নমানের খাবার, অপরিচ্ছন্ন শৌচাগারের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, আটকে রাখা হলেও ঠিক মতো পরীক্ষা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান পরেশনাথবাবু বলেন, ‘‘প্রথম দু’দিন পঞ্চায়েত খাবার ব্যবস্থা করেছিল। তার পরে ব্লক প্রশাসন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের রান্নার বরাত দেয়। তিন-চারবেলা খাওয়ার জন্য মাথা পিছু ৮০-৮৫টাকা ধার্য করা হয়। এতে ভাল মানের খাবার কি ভাবে জুটবে?”

সামগ্রিক ভাবে গোটা ঘটনার বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি বিডিও (ভাতার) শুভ্র চট্টোপাধ্যায়।

পাশাপাশি, ভাতারের মতো নানা অভিযোগে মঙ্গলকোটের কাশেমনগরের কোয়রান্টিন কেন্দ্র এনএজে উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটে বিক্ষোভ দেখান পরিযায়ী শ্রমিকেরা। ওই কেন্দ্রে ১০৯ জন পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন বলে জানা যায়। শনিবার রাত থেকে একাধিক পরিষেবা মিলছে না বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকরা। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে শ্রমিকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। ব্লক দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান মায়া মাঝি জানান, ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিডিও (মঙ্গলকোট) মুস্তাক আহমেদ বলেন, “ওই কেন্দ্রে সব রকমের ব্যবস্থা রয়েছে। তবুও কয়েকজন শ্রমিক বাড়ির মত সুবিধা চেয়ে নানা জিনিসের দাবি করছিলেন। আমরা কথা বলে সমস্যা মিটিয়েছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bhatar Migrant workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy