Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

রোগী যাচ্ছেন নার্সিংহোমে, ‘সক্রিয়’ দালাল

বর্ধমান মেডিক্যালে ‘দালাল-দৌরাত্ম্য’ নতুন নয়। মাঝেসাঝে পুলিশের হাতে দালালেরা ধরাও পড়ে। তবে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে পুলিশের নজরদারির জন্যে দালালদের হাসপাতালে দেখা মিলছিল না।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৯ ০০:২৯
Share: Save:

বছরের অন্য সময়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বহির্বিভাগে ফি দিন অন্তত ১০ হাজার রোগী আসেন বলে জানা গিয়েছে। সেখানে বৃহস্পতি ও শুক্রবার ডাক্তারেরা মাত্র দেড় হাজার রোগী দেখেছেন, খবর হাসপাতাল সূত্রে। এই পরিস্থিতিতে ‘ভিড়’ বাড়ছে খোসবাগানে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার ও বিভিন্ন নার্সিংহোমে। এই ‘সুযোগ’কে কাজে লাগিয়ে হাসপাতাল চত্বর থেকে রোগীদের নার্সিংহোমে নিয়ে যাচ্ছে দালালেরা, অভিযোগ রোগীর পরিজনদের একাংশের।

বর্ধমান মেডিক্যালে ‘দালাল-দৌরাত্ম্য’ নতুন নয়। মাঝেসাঝে পুলিশের হাতে দালালেরা ধরাও পড়ে। তবে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে পুলিশের নজরদারির জন্যে দালালদের হাসপাতালে দেখা মিলছিল না। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে ফের ওই দালালদের দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, ওই সব দালালেরা সরাসরি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আসছেন না। ওই সব দালালদের হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ঢোকার মুখের উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে বলে জানা যায়।

এনআরএস-কাণ্ডের জেরে মেডিক্যালে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, রোগীদের এ কথা জানিয়ে তাঁদের নার্সিংহোমে নিয়ে যাচ্ছে ওই দালালেরা, জানান রোগীর পরিজনেরা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা এক কর্মীর কথায়, “গত কয়েক দিনে বেশ কয়েক জন দালালকে ভয় দেখিয়ে এলাকা ছাড়া করেছি। এ বার তাঁদের দেখতে পেলেই ধরা হবে।’’ খোসবাগানের এক নার্সিংহোমের অন্যতম অধিকর্তারও দাবি, “মেডিক্যাল কলেজ থেকে রোগী ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে জিটি রোডের ধারে বেশ কিছু নার্সিংহোমের। সুযোগ বুঝে কেউ কেউ পরিস্থিতি কাজে লাগাচ্ছেন। তবে মেডিক্যাল কলেজের অচলাবস্থার প্রভাব খোসবাগানের অধিকাংশ নার্সিংহোমেই পড়েনি।’’

খোসবাগানের বিভিন্ন ‘ক্লিনিকে’র ম্যানেজারেরা জানান, হাসপাতালের বহির্বিভাগের রোগীদের একাংশ খোসবাগানে চিকিৎসার জন্য আসছেন। ওই সব রোগীরা হাসপাতালে বহির্বিভাগ বন্ধ দেখেই ক্লিনিকগুলিতে ঢুকছে বলেও দাবি তাঁদের।

জিটি রোডের ধারে থাকা বিভিন্ন নার্সিংহোমের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দু’দিনে বিভিন্ন নার্সিংহোমে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ রোগী ভর্তি বেড়ে গিয়েছে। আবার অনেক নার্সিংহোমের কর্তাদের দাবি, “বীরভূমের রোগীর উপরে আমাদের নার্সিংহোম নির্ভরশীল। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গোলমাল শুনে রোগীরা স্থানীয় ভাবেই চিকিৎসা করিয়ে নিচ্ছেন। সে জন্যে আমাদের নার্সিংহোমে সে ভাবে রোগীদের ভিড় বাড়েনি।’’ সোমনাথ দাস নামে এক নার্সিংহোম মালিক বলেন, “বহির্বিভাগের চাপ অস্বাভাবিক রকম বেড়ে গিয়েছে।’’

মেডিক্যালে অচলাবস্থার জন্য রোগীদের ভিড় বাড়তে শুরু করায় নার্সিংহোম মালিকদের সংগঠন বৈঠক করেছে। শুক্রবারের ওই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এই পরিস্থিতি বজায় থাকলে নার্সিংহোমগুলিতে রোগীদের চাপ তৈরি হবে। এই অবস্থায় রোগীদের পরিষেবা যাতে ঠিক থাকে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক আল্হাজউদ্দিন শেখের দাবি, “আমরা যাতে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, সেটাই আলোচনায় উঠে এসেছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy