এই ওয়ার্ডেই হবে দশ তলা ভবন। নিজস্ব চিত্র
একই ছাদের তলায় মা ও শিশুদের (মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব) উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গড়ে ওঠার কথা ছিল বর্ধমানে। জাতীয় স্বাস্থ্য অভিযান (এনএইচএম) থেকে অনুমোদনও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জায়গার অভাবে সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। আট বছর পরে ফের ওই হাব তৈরির প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। ঠিক হয়েছে, হাসপাতালের রাধারানি ওয়ার্ড ভেঙে সে জন্য দশ তলা ভবন তৈরি হবে। সেখানেই ছড়িয়ে থাকা শিশু, প্রসূতি ও অন্তঃসত্ত্বাদের ওয়ার্ডগুলি এক ছাদের তলায় আনা হবে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, তাতে প্রসূতি, অন্তঃসত্ত্বা, স্ত্রীরোগ ও শিশু-রোগের উন্নত চিকিৎসা মিলবে।
রাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, “বর্ধমান মেডিক্যালে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবের জন্য রাজ্য সরকার প্রাথমিক অনুমতি দিয়েছে। ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার প্রস্তাবও নিয়েছে। শনিবার সমিতির সভায় বিশদ আলোচনা হয়েছে।’’ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে নার্সিং কলেজের সামনে ফাঁকা জায়গায় (বর্তমানে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন গড়ে উঠেছে) ‘মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব’ গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। যা তৈরির জন্য ‘জাতীয় স্বাস্থ্য অভিযান’ থেকে টাকা বরাদ্দ হয়ে গিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় জায়গা দিতে নারাজ হওয়ায়, টাকা ফেরত গিয়েছিল। তার পর থেকে বর্ধমানে এই প্রকল্প বিশ বাঁও জলে চলে যায়।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি প্রসূতি ও অন্তঃসত্ত্বাদের ওয়ার্ড থেকে সদ্যোজাতকে বিভাগে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে সমস্যা তৈরি হয়। বেশ কয়েকটি শিশুর অবস্থা খারাপ হয়, তার উপরে শিশুমৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছিল। সে সব তথ্য দিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ‘মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব’ তৈরির আবেদন করা হয়। বর্ধমানের রাজ আমলে তৈরি রাধারানি ওয়ার্ড ভেঙে দশ তলা ভবন করে সেখানেই ‘হাব’ তৈরির জন্য ৮০ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “মা ও শিশুদের চিকিৎসার পরিকাঠামো উন্নয়ন হবে। চিকিৎসা পরিষেবা আধুনিক হবে। ঝুঁকিপূর্ণ মায়েদের যেমন দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যাবে, তেমনই সদ্যভূমিষ্ঠদের শিশু বিভাগে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য অহেতুক সময় নষ্ট হবে না।’’ তিনি জানান, রাধারানি ওয়ার্ড ভাঙার জন্য বর্ধমানের রাজ পরিবারের অনুমতি পাওয়া গিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শিশু বিভাগে ২৬৪টি ও প্রসূতি বিভাগে ৩১২টি শয্যা নিয়ে হাব শুরু হবে। এই ছাতার তলায় উন্নত অস্ত্রোপচার কেন্দ্র, শিশুদের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। এ ছাড়াও, একই ভবনে এনআইসিইউ, পিআইসিইউ, সিসিইউও থাকবে। অস্ত্রোপচারের পরে প্রসূতিদের রাখার জন্য পৃথক ইউনিট তৈরি হবে। ওই ‘হাবে’ স্ত্রীরোগের চিকিৎসাও হবে। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তুভ নায়েক বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। স্বাস্থ্য সচিব মেডিক্যাল কলেজে এলে, কেন ওই হাব প্রয়োজন আমরা তা বলেছিলাম। এখন আপাতত হাব তৈরির প্রাথমিক অনুমতি দিয়েছে সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy