ভাতারে ট্রাক ভাঙচুর। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
শহরাঞ্চলে দোকান-বাজার খোলা। কিন্তু গ্রামীণ এলাকায় খানিক প্রভাব পড়ল ধর্মঘটের। বেশিরভাগ বাস চলাচলও বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। ভিড় হয় ট্রেনে। বুধবার জেলার ছবিটা ছিল এমনই। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের বিভিন্ন পরীক্ষাও নির্বিঘ্নে মিটেছে বলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিভিন্ন দফতরে ৯৯.৪ শতাংশ কর্মী হাজির ছিলেন। যদিও সিপিএমের দাবি, গ্রামীণ এলাকায় ধর্মঘটে খুব ভাল সাড়া মিলেছে। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, কাজের দিন মানুষ ধর্মঘটকে সমর্থন করেন না, তা এ দিন ফের প্রমাণ হয়ে গেল।
বর্ধমান শহরে এ দিন অধিকাংশ জায়গায় দোকান-বাজার খোলা ছিল। স্বাভাবিক ছিল অধিকাংশ স্কুল-কলেজও। আলিশা বা নবাবহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে বাইরে যাওয়ার অনেক বাস না ছাড়লেও টাউন সার্ভিস বাস চলেছে স্বাভাবিক ভাবেই।
সকাল থেকে কাটোয়া শহরে অনেক দোকানপাট বন্ধ ছিল। তবে মাছ ও আনাজের বাজার বসেছিল। আনাগোনা ছিল ক্রেতাদেরও। অফিস-আদালত খোলা থাকলেও লোকজন বিশেষ আসেননি। যাত্রীর অভাবে অনেক বাস চলেনি। কাটোয়া-ব্যান্ডেল, কাটোয়া-বর্ধমান লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তবে কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখায় সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা ট্রেন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা সমস্যায় পড়েন। দাঁইহাট, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামেও ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব নজরে পড়েছে।
সুনসান ছিল কালনা শহরও। সকালে শহরের পুরনো বাসস্ট্যান্ড-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় কয়েকজন দোকানপাট খুললেও পরে তাঁরা তা বন্ধ করে দেন। চকবাজারে বেশিরভাগ দোকান বন্ধ ছিল। সকাল থেকেই ধর্মঘটের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছিলেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। সকালে এসটিকেকে রোড অবরোধ করা হয়। পুরসভা-সহ নানা সরকারি অফিস খোলা থাকলেও মানুষের আনাগোনা দেখা যায়নি। আদালতে আইনজীবীদের অনেকে আসেননি। বাসও যাতায়াত করেছে কম। ধাত্রীগ্রামে অবরোধে হয়।
সকালে পূর্বস্থলীর ভাণ্ডারটিকুরি স্টেশনে ঘণ্টাখানেক রেল অবরোধ করা হয়। বিভিন্ন স্টেশনে কয়েকটি লোকাল ট্রেন আটকে পড়ে। রেল অবরোধে হাজির ছিলেন সিপিএমের মহিলা সমিতির রাজ্য সভানেত্রী অঞ্জু কর, পূর্বস্থলী এরিয়া সম্পাদক সুব্রত ভাওয়াল, পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক প্রদীপ সাহা। এ দিন জাহান্নগরেও এসটিকেকে রোড অবরোধ হয়। গলসিতে অনেক দোকানপাট বন্ধ ছিল। ব্যাঙ্ক ছাড়া, অন্য অফিস ও স্কুল-কলেজ খোলা ছিল। তবে উপস্থিতির হার কম ছিল বলে জানা গিয়েছে।
সিপিএম নেতা তথা কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার দাবি করেন, ‘‘জেলার গ্রামীণ এলাকায় সর্বাত্মক ধর্মঘট হয়েছে। তৃণমূল ও পুলিশ আটকানোর চেষ্টা করেছিল।’’ বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর অভিযোগ, ‘‘ধর্মঘট ঘিরে সিপিএম যে ভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে, তাতে যে রাজ্যের শাসক দলের প্রছন্ন মদত ছিল, তা বোঝা যাচ্ছে।’’ জেলা তৃণমূলের সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ পালন করেছেন আমাদের কর্মীরা। কোথাও কোনও গোলমাল হয়েছে কি না, আমার জানা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy