Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Banakali Puja

কালীপুজোর পরের দিন রাজকুসুমে পূজিত হন বনকালী

সেই রীতি অনুযায়ী কালীপুজোর দিন রায় পরিবারের সদস্যেরা কালীর অন্নভোগের আতব চাল জোগাড় করে ভোগ নিবেদনের জন্য রাজকুসুম থেকে পায়ে হেঁটে গোপালপুর ভট্টাচার্য পরিবারের কালীপুজোয় পৌঁছে দেওয়া হয়।

পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার রাজকুসুম গ্রামে চলছে বনকালী পুজো। সোমবার।

পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার রাজকুসুম গ্রামে চলছে বনকালী পুজো। সোমবার। ছবি: বিপ্লব ভট্টাচার্য।

বিপ্লব ভট্টাচার্য
কাঁকসা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৪৩
Share: Save:

কালীপুজোর পরের দিন, অর্থাৎ প্রতিপদের দিন জঙ্গলের মধ্যে পুজো করা হয়। আর এখানে কোনও প্রতিমা নয়, মূলত পুজো করা হয় গাছকে। কাঁকসার রাজকুসুম গ্রামের এই পুজো ‘বনকালী’ নামে পরিচিত। সোমবার এই পুজো উপলক্ষে বেশ ভিড় দেখা গিয়েছে।

কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের রাজকুসুম গ্রামের রায় পরিবারের এই পুজোর বয়স কত, তা ঠিক ভাবে কেউ বলতে পারেননি। তবে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’শো বছর পেরিয়েছে এই কালীপুজো। পরিবারের বর্তমান সদস্যা মীরা রায় জানান, তাঁরা পূর্বপুরুষদের কাছে জেনেছেন, কয়েকশো বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে আমাবস্যার প্রতিপদে এই পুজো শুরু করেন পরিবারের সদস্যেরা। রাজকুসুম গ্রামের অদূরে জঙ্গলের মাঝে এই পুজোর আয়োজন করা হয়। জনশ্রুতি আছে, গোপালপুরের ভট্টাচার্য পরিবারের কোনও এক সদস্য স্বপ্নাদেশ পান বনকালীর অন্নভোগ নিবেদন করার জন্য। ওই একই স্বপ্ন একই রাতে রায় পরিবারের তৎকালীন এক সদস্যও পান। কিন্তু রাজকুসুমের রায় পরিবার উগ্রক্ষত্রিয় পরিবার হওয়ায়, অন্নভোগ দেওয়ার অধিকারী নন। এর পরে দুই পরিবারের সম্মতিতে কালীপুজোর রাতে গোপালপুরে, যা বড়কালী নামে পরিচিত। আর পরের দিন রাজকুসুমের জঙ্গলে বনকালীর পুজো শুরু হয়।

সেই রীতি অনুযায়ী কালীপুজোর দিন রায় পরিবারের সদস্যেরা কালীর অন্নভোগের আতব চাল জোগাড় করে ভোগ নিবেদনের জন্য রাজকুসুম থেকে পায়ে হেঁটে গোপালপুর ভট্টাচার্য পরিবারের কালীপুজোয় পৌঁছে দেওয়া হয়। যা বড়কালী নামে পূজিত হন। সেখান থেকে ফেরার পথে পুজোর ঘট, মাটির হাতি, ঘোড়া নিয়ে আসা হয়। এবং আমবস্যার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদে বনকালীর পুজোয় সেগুলি ব্যবহার করা হয়। রায় পরিবারের সদস্য বিশ্বজিৎ রায় জানান, এখানে কোনও প্রতিমার পুজো হয় না। এখানে দু’টি মাটির ঘটে পুজো করা হয়। প্রতি আমাবস্যায় এখানে পুজো হলেও, কালীপুজোর পরের দিন প্রতিপদে আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও এই পুজোয় যোগ দেন।

রায় পরিবারের আর এক সদস্য সনৎকুমার রায় জানান, জঙ্গলের একটি নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। সেখানে এই পুজো করা হয়। আশপাশের বিভিন্ন গাছে দেবীর চোখের মতো চিহ্নও ফুটে ওঠেবলে দাবি তাঁর। কথিত আছে, দেবী খুবই ক্ষমতাশালী। তাই দেবীকে শিকল দিয়ে বেঁধেও রাখা হত। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জঙ্গলের ওই অংশের বিভিন্ন গাছে নানা রকম দাগও রয়েছে। যা শিকলের দাগ বলে দাবি স্থানীয়দের।

এই পুজো দেখতে আসেন পানাগড় থেকে সমীর রায়, বীরেশ ভট্টাচার্যেরা। তাঁরা বলেন, “এ এক অন্য পুজো। তাই প্রতি বছর এখানে আসি। জঙ্গলের মাঝে এই পুজো দেখতে বেশ ভাল লাগে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Kanksa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy