বাঁ দিকে, জঙ্গলের পথ। ডান দিকে, অটোয় সচেতনতা প্রচার। কাঁকসায়। নিজস্ব চিত্র।
বসন্তে গাছের পাতা ঝরার সময়েই, প্রতি বছর আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ফলে, গাছের যেমন ক্ষতি হয়। তেমনই ক্ষতি হয় অনেক কীটপতঙ্গের। ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বন্যপ্রাণীদেরও। সেই প্রবণতা বন্ধ করতে ইতিমধ্যে পশ্চিম বর্ধমানে মাইকে করে সচেতনতা প্রচার শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বন দফতর। চলছে জঙ্গলের পথে নাকা-তল্লাশিও। দফতরের দাবি, লাগাতার প্রচার ও নজরদারি চালানোয় জঙ্গলের ঝরা পাতা, শুকনো ডালে আগুন ধরানোর প্রবণতা কিছুটা হলেও কমেছে।
পশ্চিম বর্ধমানে কাঁকসায় জঙ্গল সব থেকে বেশি। কাঁকসা বনাঞ্চল সংশ্লিষ্ট দফতরের বর্ধমান ডিভিশনের মধ্যে পড়ে। এই ডিভিশনের মধ্যে রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের জঙ্গলও। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুই অঞ্চলে জঙ্গলের পরিমাণ ১৫ হাজার হেক্টরের বেশি। গত কয়েক বছরে এই দুই এলাকার জঙ্গল অনেকটাই বেড়েছে। এর পিছনে আশপাশের মানুষজনেরও ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি বন দফতরের।
কিন্তু প্রতি বছর পাতা ঝরার মরসুমে জঙ্গলে আগুন লাগানোর অভিযোগ ওঠে। সে জন্য বন দফতরের তরফে প্রতিটি এলাকায় সচেতনতা প্রচার চালানো হয়। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গলে আগুন লাগলে যে সলকলের ক্ষতি, তা সাধারণ মানুষকে বোঝানো হয়েছে। জঙ্গলের মধ্যে অনেক আদিবাসী গ্রাম রয়েছে। আগুন ছড়িয়ে পড়লে তাঁদের বাড়িঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পরে। এই সমস্ত বিষয়ও নিয়েই সচেতন করার পাশাপাশি, নজরদারিও চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দফতরের কর্তারা।
কী ভাবে চলছে প্রচার ও নজরদারি? বন রক্ষার জন্য ‘বনসুরক্ষা’ কমিটি রয়েছে। কমিটির সদস্যেরা জঙ্গলের আশপাশের গ্রামগুলিতে মাইকে প্রচারের পাশাপাশি, লিফলেট বিলি, গ্রামে গ্রামে সভা করে মানুষজনকে সচেতন করছেন। নাকা-তল্লাশির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। কারণ, অনেকে নানা কাজে জঙ্গলে যান। তাঁরা যাতে দেশলাই জাতীয় কোনও কিছু নিয়ে যেতে না পারেন সে জন্য এই ব্যবস্থা। তা ছাড়া, বীরভূম থেকে এসে যে সব মানুষজন জঙ্গল থেকে শুকনো পাতা সংগ্রহ করেন, তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। কারণ, শুকনো পাতা কম হলে জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনাও কমবে।
বন দফতরের দুর্গাপুরের এক কর্তা জানান, এই সব পদক্ষেপ করায় গত বছর জঙ্গলে আগু ধরানোর প্রবণতা কিছুটা কমেছে। তাই এ বার আগেভাগেই প্রচারে নামা হয়েছে। সহযোগিতাও মিলছে বলে দাবি।ডিএফও (বর্ধমান) নিশা গোস্বামী বলেন, “আমরা জঙ্গল পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ ভাবে সচেতন করছি। এলাকায় এলাকায় প্রচারও চালানো হচ্ছে।”
বুদবুদের লবনধার গ্রামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে অর্ণব ঘোষ বলেন, “সংগঠনের তরফে আমাদের জীবনে জঙ্গলের গুরুত্ব কী, তা বোঝানো হচ্ছে।” কাঁকসার বাসিন্দা সুনীল কিস্কু, রবিন মুর্মুরা বলেন, “আমরা সারা বছর জঙ্গল থেকে কিছু না কিছু পেয়ে থাকি। তাই জঙ্গল বাঁচানো জরুরি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy