Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Totos from Out State

ভিন্‌ রাজ্য থেকে ঢুকে দিব্যি ছুটছে অটো-টোটো

চুরুলিয়ার নজরুল মহাবিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, তাঁদের কলেজে জামুড়িয়া থেকে কোনও পড়ুয়া কার্যত আসে না।

অটো-টোটোর জন্য যানজট। আসানসোলে।

অটো-টোটোর জন্য যানজট। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
আসানসোল শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০২
Share: Save:

যত্রতত্র গজিয়ে উঠেছে টোটোর শো-রুম। প্রতিদিন জেলা জুড়়ে তিরিশের বেশি টোটো বিক্রি হচ্ছে সেখান থেকে। পরিবহণ ব্যবসায় জড়িতদের অনেকের দাবি, পশ্চিম বর্ধমানে প্রায় ২০ হাজার টোটো চলছে। পরিবহণ সংগঠনের এক নেতার অভিযোগ, ঝাড়খণ্ড থেকেও অটো এবং টোটো নিয়ে প্রায়ই বহিরাগতেরা রুনাকুড়া ঘাট, বরাকর ও ডিসেরগড় ঘাট হয়ে এই জেলায় ঢুকে পড়ছেন। প্রশাসন কঠোর না হওয়ায় এই পরিস্থিতি হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের।

দুর্গাপুর মিনিবাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক শান্তি বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘দুর্গাপুর মিনিবাস ট্রান্সপোর্ট অপারেটর’-এর সম্পাদক অলক চট্টোপাধ্যায় থেকে আসানসোল বড় বাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মুখোপাধ্যায়দের দাবি, রাস্তায় অটো-টোটোর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সুযোগ পেলেই সেগুলির চালকেরা বাসকর্মীদের মারধর করার সাহস পাচ্ছেন। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আরও অনেক বাস বন্ধ হয়ে যাবে। প্রভাব পড়বে যাত্রী পরিবহণে।
তাঁদের দাবি, তাঁরাও চান অটো ও টোটো চলুক, তবে তা সরকারের নির্দেশিকা মেনে।

বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, এই টানাপড়েনে আদতে বিশেষ প্রভাব পড়ছে বাসের টাউন সার্ভিসে। কারণ, অল্প দূরত্ব এবং স্টপেজ অনুযায়ী বাসের মতো ভাড়া হওয়ায় যাত্রীরা অটো বা টোটোয় উঠে পড়ছেন। এমনকি, ১৫-২০ কিলোমিটার দূরত্বে যেতেও প্রধান সড়ক হয়ে টোটো-অটো চলছে বলে অভিযোগ। এর প্রভাব পড়ছে গ্রামীণ এলাকাতেও। যেমন, জামুড়িয়া থেকে চুরুলিয়া প্রায় দশ বছর আগে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চুরুলিয়ার নজরুল মহাবিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, তাঁদের কলেজে জামুড়িয়া থেকে কোনও পড়ুয়া কার্যত আসে না। প্রায় প্রতি বছর আসন খালি থাকছে। সময়ে কলেজে পৌঁছতে গেলে অনেক বেশি খরচ করে টোটো ‘বুক’ করতে হয়, যা বহু পড়ুয়ার পক্ষেই সম্ভব হয় না।

জামুড়িয়ার দরবারডাঙার বাসিন্দা মধুসূদন সোমণ্ডল জানান, বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের এলাকাতেও একই রকম পরিস্থিতি। তাঁর কথায়, ‘‘বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেখানে ২০ মিনিটে গন্তব্যে যাওয়া যেত, সেখানে ৪০ মিনিট লেগে যাচ্ছে। বেশিরভাগ টোটোয় আলোর ব্যবস্থা নেই। রাতে খুবই সমস্যা হয়। তাই বিভিন্ন রুটে বাস বন্ধ হয়ে গেলে যাত্রীদেরই বিপদ।’’

আসানসোল মোটর ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়নের নেতা রাজু অহলুওয়ালিয়ার বক্তব্য, ‘‘পরিবহণ দফতরের উচিত, নিদিষ্ট পদ্ধতিতে প্রয়োজন মতো টোটো ও অটোর অনুমতি দেওয়া। নিদিষ্ট রুটের ব্যবস্থা করে সেগুলির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা। তা না হলে বাস পরিবহণ শিল্প নষ্ট
হয়ে যাবে।’’

জেলা প্রশাসন সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে সমস্ত অটো ও টোটোকে সংযোগকারী রাস্তায় চালাতে হবে। এলাকার প্রধান রাস্তায় উঠতে পারবে না তারা। সেই প্রক্রিয়া শুরু করতে জেলা জুড়ে ইতিমধ্যে মাইকে প্রচার করা হয়েছে।

(শেষ)

অন্য বিষয়গুলি:

Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE