কম্বল বিলির কর্মসূচিতে বিপর্যয়ের ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছেন। ফাইল ছবি।
আসানসোলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কম্বলদান কর্মসূচিতে পদপিষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনায় বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি এবং তাঁর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল আসানসোল উত্তর থানায়। তার ভিত্তিতে ওই কর্মসূচির অন্যতম আয়োজক আসানসোল পুরসভার বিরোধী নেত্রী চৈতালি-সহ বিজেপির কয়েক জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলাও রুজু হয়েছে।
কম্বল বিলির কর্মসূচিতে বিপর্যয়ের ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে চৈতালিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন বুধবারের ঘটনায় প্রাণ হারানো ঝালি বাউরি (৫৫)-র ছেলে সুখেন বাউরি। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ (অবহেলার কারণে মৃত্যু), ৩০৮ (অপরাধজনিত নরহত্যার চেষ্টা) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে কোথাও শুভেন্দুর নাম নেই।
আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুধীরকুমার নীলকণ্ঠম জানান, শুক্রবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে হাজির করিয়ে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হবে। সুধীর বলেন, ‘‘কী ভাবে ঘটনাটা ঘটল, তার তদন্ত শুরু হয়েছে। ডিসি ওয়েস্ট অভিষেক মোদীর তত্ত্বাবধানে তদন্ত চলছে।’’
জিতেন্দ্র, তাঁর স্ত্রী ও বিজেপি কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’ জিতেন্দ্ররও দাবি, ‘‘তৃণমূল তাড়াহুড়ো করে আমার বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে।’’ পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক তথা মেয়র বিধান উপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কর্মসূচি ছিল বিজেপির। এর মধ্যে তৃণমূল কোত্থেকে এল? তৃণমূল কোনও ভাবেই এর সঙ্গে জড়িত নয়। জিতেন্দ্র তিওয়ারি ভুলভাল বকছেন!’’
আসানসোলের ঘটনায় শুরু থেকেই আয়োজকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, পাঁচ হাজার লোককে যে কম্বল বিলি করা হবে, কেন তার উল্লেখ পুলিশকে পাঠানো চিঠিতে নেই? কেন নেই বিরোধী দলনেতার হাজির থাকার প্রসঙ্গও? কর্মসূচিতে শৃঙ্খলারক্ষার ক্ষেত্রেই বা কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? কেন অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা ছিল না সেখানে?
একই সঙ্গে, পুলিশের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। কেন দশ দিন আগে অনুমতির আবেদনের চিঠি পেয়েও তারা কোনও উত্তর দেয়নি, সেই প্রশ্ন তুলছেন আয়োজকেরা। ঘটনার পর শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, তিনি ঘটনাস্থল ছাড়ার পর সেখান থেকে নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়। তার পরেই ওই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এত জমায়েত নজরে আসা সত্ত্বেও কেন নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হল, কেন সিভিক ভলান্টিয়ারদের সরানো হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
এই ঘটনায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘শুধু পুলিশের ভরসায় কর্মসূচি করা যায় না। নিজেদেরও কিছু ব্যবস্থা রাখতে হয়।’’ সরাসরি আয়োজকদের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘অনুষ্ঠানটিই অবৈধ। পুলিশের অনুমতি ছাড়া হয়েছে। আয়োজকদের ব্যর্থতার কথা দিলীপ ঘোষই বলে দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy