এ ভাবেই খাওয়া। নিজস্ব চিত্র
আদালতের নির্দেশে ভাতারের এরুয়ারে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলা দু’কাঠা জায়গা দখলমুক্ত করে ফেরত দেওয়া হয়েছে কাটোয়ার বাসিন্দা সামিনা বেগম চৌধুরীকে। জমি ফেরত পেয়ে কেন্দ্রের ঘরে তালা ঝুলিয়েছেন তিনি। ফলে, শুক্রবার কেন্দ্রের পাশে খালি জায়গাতেই পড়াশোনা ও খাওয়ার আয়োজন হয়। রাস্তার ধারে বসেই খেতে দেখা যায় পড়ুয়াদের। অভিভাবকদের একাংশের দাবি, এ ভাবে চললে বাচ্চাদের আর কেন্দ্রে পাঠাবেন না।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে নাগাদ ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির থেকে প্রায় সাত লক্ষ টাকা খরচে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি তৈরি হয়। সামিনা বেগম চৌধুরীর দাবি, ২০১৫ সাল থেকে জায়গাটি ফেরত পেতে তিনি লড়াই করেছেন। মাঝে মামলায় জিতলেও, জায়গার দখল পাননি। তাই ফের আদালতের দ্বারস্থ হন। অবশেষে আদালতের নির্দেশে, পুলিশের সহযোগিতায় জায়গার দখল পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার আদালতের প্রতিনিধি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই গ্রামে গিয়ে ওই জায়গার দখল দেন।
গোটা বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে। ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর দাবি, ‘‘আমাদের কাছে তথ্য অনুযায়ী, জায়গাটি সামিনার মা আজিজা বিবির কাছে কিনেছিলেন জিয়ার মহম্মদ। আমাদের অনুরোধে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য জায়গাটি দান করেন তিনি। কেন্দ্র তৈরির সময়ে সামিনা কোনও বাধা দেননি। চালু হওয়ার পরে হঠাৎ এসে নিজের জায়গা বলে দাবি করেন। এ ভাবে এতগুলি শিশুর পঠনপাঠন ও খাওয়া বন্ধ হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।’’
জিয়ার মহম্মদের দাবি, তিনি ওই জায়গাটির দাম বাবদ আজিজা বিবিকে ৭২ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। আজিজা অসুস্থ থাকায় তখন তাঁকে রেজিস্ট্রি করতে চাপ দেওয়া হয়নি। কিন্তু ডাক্তার দেখানোর নাম করে মাকে নিয়ে গিয়ে সামিনা ওই জায়গা নিজের নামে লিখিয়ে নেন, অভিযোগ জিয়ারের। তাঁর আরও দাবি, জায়গাটি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় বছর দুয়েক আগে আরও ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। যদিও জিয়ারের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন সামিনা।
গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য নীলকান্ত অধিকারী বলেন, ‘‘আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে অঙ্গনওয়াড়ির জিনিসপত্র আপাতত কেন্দ্রের পাশে জিয়ার মহম্মদের একটি চালায় রাখা হয়েছে। দ্রুত যাতে কেন্দ্রটি নিরাপদ জায়গায় চালু করা যায়, প্রশাসনের কাছে সে ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানাই।’’ বিডিও অরুণকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিকল্প জায়গার খোঁজ চলছে। আপাতত পার্শ্ববর্তী নরাশপুর শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে এই অঙ্গনওয়াড়ির কাজকর্ম চালু থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy