Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Ancient Mosques Damaged

ধ্বংস হওয়ার মুখে হাবশি আমলের মসজিদ

১৯৯২ সাল থেকে মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণে এগিয়ে আসে কালনা আঞ্জুমান সোসাইটি। সংস্থার তরফে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন শানাওয়াজউদ্দিন মণ্ডল।

এমনই হাল কালনার মসজিদের।

এমনই হাল কালনার মসজিদের। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪ ০৮:৪৬
Share: Save:

বাংলায় হাবশি রাজাদের শাসনকালে, আনুমানিক ১৪৯০ খ্রিষ্টাব্দে কালনার শ্বাসপুর এলাকায় তৈরি হয়েছিল একটি মসজিদ। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রাচীন স্থাপত্যটি আজ প্রায় ধ্বংসের মুখে।

জানা যায়, ১৪৮৭ থেকে ১৪৯৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় হাবশি রাজাদের রাজত্ব ছিল। সেই সময়েই প্রায় ৪২ শতক জমির উপরে তৈরি হয় একটি মসজিদ। ৪৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ২৫ ফুট প্রস্থের মসজিদটির দেওয়ালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল লতাপাতা, কানপাশা-সহ নানা নকশা। এক সময় সেখানে ছ’টি গম্বুজও ছিল বলে জানা যায়। মসজিদটির কাছেই রয়েছে মীরের বাগান ও পূর্ব সাহাপুর এলাকা। স্থানীয় ইতিহাস থেকে জানা গিয়েছে, এক সময় এই দুই এলাকায় খাঁ পদবীর অভিজাত মুসলিমদের বাস ছিল। তাঁরা এই মসজিদটিতে নমাজ পড়তে আসতেন বলে শোনা যায়।

বর্তমানে মসজিদটির আশপাশে কোনও পাঁচিল নেই। সামনের অংশ ঘিরে রাখা রয়েছে বাঁশের দরমা দিয়ে। বিশালাকার মসজিদের বেশির ভাগটাই ধসে পড়েছে। চারপাশে স্তূপাকারে রয়েছে ছোট ছোট ইট। সে সব ইটের গায়ে এখনও দেখা যায় নানা নকশা। কোনও গম্বুজ আর অবশিষ্ট নেই। তবে যেখানে গম্বুজগুলি ছিল, তার পাশে পড়ে রয়েছে ভারী পাথর। মসজিদের সামনে এবং পিছনের কিছু অংশ এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বর্ষা এলেই সেখান থেকে ইট, পাথর খসে পড়তে থাকে। এক সময় কালনার প্রাচীন নিদর্শনগুলি পূর্ত দফতর থেকে পরিদর্শন করেছিল। তখন তারা ‘পিডব্লুডি’ লেখা একটি স্টিকারও সেঁটে দিয়ে যায়। তবে কোনও কাজ হতে দেখা যায়নি বলে জানান তাঁরা।

১৯৯২ সাল থেকে মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণে এগিয়ে আসে কালনা আঞ্জুমান সোসাইটি। সংস্থার তরফে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন শানাওয়াজউদ্দিন মণ্ডল। তিনি প্রয়াত হওয়ার পরেও সংস্থার তরফেই চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ। আশপাশে জঙ্গল সাফ করে সামনের ও পিছনের অংশে তৈরি করা হয়েছে ফুল, ফলের বাগান। সংস্থার সহ-সভাপতি তৈয়ব শেখ বলেন, “হাবশি রাজাদের আমলে তৈরি খুব বেশি স্থাপত্য বাংলায় নেই। সে দিক থেকে এই মসজিদটি সরকারি উদ্যোগে রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি ছিল। আমরা সাধ্য মতো চেষ্টা করি। তবে যে ভাবে প্রতি বর্ষায় মসজিদটির ক্ষতি হয়, বাকি অংশটুকুও কত দিন থাকবে জানি না।” সংস্থার সহ-সম্পাদক আব্বাস আলি শেখের বক্তব্য, “এখনও যেটুকু অংশ রয়েছে তা সংস্কার ও সংরক্ষণ করলে পর্যটকদের কাছে তা আকর্ষণীয় হতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগ জরুরি।” এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পরিমল মণ্ডল জানান, সরকারি বৈঠকে মসজিদটির ভগ্ন দশার কথা তুলে ধরবেন তিনি। কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, “মসজিদটি আমি পরিদর্শন করব। চেষ্টা করব ওখানে সরকারি উদ্যোগে কিছু করার।”

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna mosque
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy