Advertisement
E-Paper

পরিবেশ বাঁচাতে রাস্তায় ঘুরে বৃক্ষরোপণ বৃদ্ধের

দুর্গাপুরের ভগৎ সিংহ মোড় থেকে আড়রা মোড় পর্যন্ত জওহরলাল নেহরু রোড বেহাল হয়ে পড়েছিল দীর্ঘদিন। সম্প্রতি আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) রাস্তাটি সংস্কার ও সম্প্রসারণ করেছে।

রাস্তার ডিভাইডারে গাছ লাগাচ্ছেন আনন্দি মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

রাস্তার ডিভাইডারে গাছ লাগাচ্ছেন আনন্দি মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

অর্পিতা মজুমদার

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫০
Share
Save

গাছ লাগানোই তাঁর নেশা। উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত বা পশ্চিমবঙ্গ— বিভিন্ন সময়ে যখন যেখানে কাটিয়েছেন, সেখানেই গাছ লাগিয়েছেন আনন্দি মণ্ডল। আদতে বিহারের বাসিন্দা এখন রয়েছেন দুর্গাপুরে। শহরের রাস্তার ডিভাইডারে এখন গাছের চারা রোপণ করতে মাঝে-মধ্যেই দেখা যায় তাঁকে।

দুর্গাপুরের ভগৎ সিংহ মোড় থেকে আড়রা মোড় পর্যন্ত জওহরলাল নেহরু রোড বেহাল হয়ে পড়েছিল দীর্ঘদিন। সম্প্রতি আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) রাস্তাটি সংস্কার ও সম্প্রসারণ করেছে। মাঝে ডিভাইডার গড়ে দু’লেনের করা হয়েছে রাস্তাটি। আনন্দিবাবু এখন সেই ডিভাইডারে গাছ লাগিয়ে চলেছেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যে প্রায় দু’শো গাছ লাগিয়ে ফেলেছেন। পকেটের টাকা খরচ করে গাছের চারা কেনেন তিনি। কেউ চারা উপহার হিসাবে দিলে হাত পেতে নেন। তাঁর কথায়, ‘‘বহু চারা দরকার। কেউ গাছের চারা দিয়ে সাহায্য করলে সুবিধা হয়।’’

পরিবেশ বাঁচানোর জন্যই তাঁর এই উদ্যোগ, জানান বৃদ্ধ। তাঁর কথায়, ‘‘শহর আরও সবুজ করে তুলতে হবে। সে জন্য অনেক গাছ লাগানো দরকার।’’ বিহারের মুঙ্গেরের জামালপুরে নিজের বাড়িতে তাঁর মুদির দোকান ছিল। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তা চালিয়েছেন তিনি। তাঁর দুই ছেলে, তিন মেয়ে। স্ত্রী মারা গিয়েছেন। তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তিনি থাকেন এক ছেলের সঙ্গে। সেই ছেলে কর্মসূত্রে কখনও গিয়েছেন উত্তরপ্রদেশে, কখনও গুজরাতে থেকেছেন। এখন রয়েছেন দুর্গাপুরে। আনন্দিবাবু জানান, ছেলের সঙ্গে যেখানেই গিয়েছেন, গাছ লাগিয়েছেন। তবে বাবার এ ভাবে এলাকা ঘুরে গাছ লাগিয়ে বেড়ানোয় ছেলের যে খুব একটা মত আছে, তা নয়। কিন্তু তিনি জেদ ধরেই এই কাজ করে চলেছেন।

আনন্দিবাবু জানান, দুর্গাপুরে এসে আর পাঁচটা জায়গার চেয়ে এই শহরের দূষণ তাঁকে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে। তাই ঠিক করেছেন, যত দিন থাকবেন, গাছ লাগিয়ে যাবেন। জওহরলাল নেহরু রোডে গাছ লাগানো শেষ হলে তিনি শহরের অন্যত্র বৃক্ষরোপণ শুরু করবেন বলেও জানান।

তাঁকে গাছ লাগাতে দেখে পথচলতি অনেকেই থমকে দাঁড়ান। আলাপ করেন কেউ-কেউ। পর দিন যাতায়াতের পথে তাঁদের কেউ-কেউ তাঁকে গাছের চারাও উপহার দেন। খুশি হন আনন্দিবাবু। তিনি তাঁদের বাড়িতে ফাঁকা জায়গা থাকলে সেখানে গাছ লাগানোর আর্জিও জানান। পেশায় ব্যবসায়ী বিশ্বদীপ বসু জানান, আনন্দিবাবুর কথা শুনে বাড়িতে পাঁচটি গাছ লাগিয়েছেন তিনি। আনন্দিবাবু বলেন, ‘‘পরিবেশ দূষণ থেকে এই বিশ্বকে বাঁচাতে গেলে গাছই একমাত্র মুশকিল আসান।’’

দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘আমরা চাই, মানুষের মধ্যে এরমক সচেতনতা তৈরি হোক। তিনি যদি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তবে আরও পরিকল্পনামাফিক কী ভাবে এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সে ব্যাপারে সাহায্য করা যেতে পারে।’’

Old Man Tree Plantation

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}