এ ভাবেই হয় মাটি পাচার। —নিজস্ব চিত্র।
ভোর থেকেই কখনও ট্রলার, কখনও নৌকা ভাসছে ভাগীরথীতে। শীতের আভাস আসতেই ওই পথে দেদার মাটি পাচার শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। কালনা শহর এবং তার আশপাশের এলাকায় নদী ঘাটগুলিতে ভোর থেকে দাঁড়ালেই দেখা যাচ্ছে এমন দৃশ্য। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ধারাবাহিক প্রশাসনিক নজরদারির অভাবেই কারবারিরা মাঝেমধ্যে অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রশাসন অবশ্য নজরদারির অভাবের কথা মানেনি।
অবৈধ মাটির কারবার অবশ্য কালনায় নতুন নয়। এক সময় রাতারাতি নদীর পাড়ের চাষজমির মাটি কেটে নিয়ে পালিয়ে যেত কারবারিরা। সম্প্রতি কৃষ্ণদেবপুর এলাকায় রাতে যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে বলে এক চাষি অভিযোগ করেন। প্রশাসনের তৎপরতায় অবশ্য সেই কারবার বন্ধ হয়।স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, চাষের জমির মাটি কাটতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে চোরা কারবারিরা ভাগীরথীতে জেগে ওঠা লম্বা লম্বা চরের মাটি কেটে দেদারে বিক্রি করছে। শেষ রাত থেকেই ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে শুরু হচ্ছে মাটি কাটার কাজ। ভোর হতেই ট্রলার এবং নৌকায় সেই মাটি তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নানা জায়গায়।
যন্ত্রচালিত ট্রলার, নৌকা বাঁধা থাকে নদীর বিভিন্ন ঘাটে। সেখান থেকে ট্রাক্টরে করে মাটি পৌঁছে যায় নানা জায়গায়। ওই কারবারের সঙ্গে যুক্ত, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনের দাবি, এক একটি কাঠের ট্রলারে মাটি কাটার লোক থাকে সাত-আট জন। ট্রলারগুলিতে ছয় থেকে আট ট্রাক্টর মাটি ধরে। ট্রাক্টর পিছু মাটি বিক্রি হয় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে। দুপুরের পর থেকে মাটি পরিবহণের জন্য ব্যবহার করা ট্রলারগুলি বাঁধা থাকে ঘাটে।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, শীতের আগে মাটি কিছুটা ঝুরঝুরে থাকে। পাশাপাশি দুর্গাপুজোর পর থেকে বেশ কিছুটা সময় সরকারি অফিসগুলিতে ছুটি চলে। সেই সুযোগ কাজে লাগায় কারবারিরা। বহু বছর ধরেই এই অভ্যাস চলছে, দাবি তাঁদের। কালনা ২ ব্লকের সাতগাছি পঞ্চায়েত এলাকায় এক সময় মাটি কারবারিদের রমরমা ছিল। ভাগীরথীর বিভিন্ন ঘাট থেকে বেশ কিছু মাটি বোঝাই নৌকা এই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকার দিকে যেতে দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও সাতগাছি পঞ্চায়েতের প্রধান হরেকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার এলাকায় বর্তমানে কোথাও মাটি কাটা হচ্ছে না। নদিয়ার দিকে হতে পারে। মাটি কারবার নিয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই।’’
কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ জানিয়েছেন, দল কোনও অবৈধ কারবার প্রশ্রয় দেয় না।অবৈধ মাটির কারবার হলে, তা গুরুত্ব দিয়ে দেখবে পুলিশ এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর।
কালনা ১ ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সৈয়দ মাসুদুল আনোয়ার বলেন, ‘‘উৎসবের মরসুমকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে কারবারিরা। আমাদের অভিযান চলছে। নজরদারিও চলছে। কালীপুজোর পরে নজরদারি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy