আমন ধান রোয়া শক্তিগড়ের আমড়া মাঠে। —নিজস্ব চিত্র।
ক্যালেন্ডারে ‘ঘোর বর্ষা’। কিন্তু উত্তরবঙ্গে উদার হলেও দক্ষিণবঙ্গে সে কৃপণ। বৃষ্টির ঘাটতি চিন্তায় ফেলেছে আমন চাষিদের। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার থেকে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে দক্ষিণবঙ্গের পাঁচ জেলার জন্য ডিভিসি চাষের জন্য জল ছাড়বে বলে সিদ্ধান্ত হল। শনিবার থেকে দুর্গাপুর ব্যারাজের দু’দিক থেকেই হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়ার জন্য জল ছাড়া হবে। মঙ্গলবার ওই পাঁচটি জেলাকে নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক কার্যালয়ে বৈঠক হয়। তবে সেচখালের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত জল পৌঁছবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্নও রয়েছে।
বৈঠকে ছিলেন বর্ধমানের ডিভিশনাল কমিশনার অবনীন্দ্র সিংহ, পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার, বর্ধমান বিভাগের প্রশাসনিক কর্তা, সেচ দফতর, ডিভিসির কর্তারা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন ১২ হাজার একর ফুট জল চেয়ে ডিভিসির কাছে দাবি করা হয়। প্রথম পর্যায়ে টানা ১৫ দিনের জন্য ১ লক্ষ ৮০ হাজার একর ফুট জল চাওয়া হয়। সে জন্য ডিভিসিকে প্রতিদিন সাত হাজার কিউসেক জল ছাড়তে হবে। কিন্তু ডিভিসির কর্তা ওই বৈঠকে জানান, গত বছরের চেয়ে মাইথন ও পাঞ্চেতে ছ’ফুট বেশি জল থাকলেও একেবারে ওই পরিমাণ জল এই মূহুর্তে ছাড়ার মতো পরিস্থিতি নেই। দামোদর ক্যানাল ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, “সেচের জল ছাড়ার হিসেব একর ফুটে করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ডিভিসি ১ লক্ষ ৩০ হাজার একর ফুট জল ছাড়তে রাজি হয়েছে। ১৫ দিন ধরে ওই জল ছাড়া হবে।” সেচ দফতর জানিয়েছে, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে প্রয়োজন মতো ডিভিসি জল ছাড়বে। এখনও পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমানে ৪৯%, বাঁকুড়াতে ৫২%, হুগলিতে ৪০%, পশ্চিম বর্ধমানে ৩৮% বৃষ্টির ঘাটতি আছে।
ওই পাঁচটি জেলার ৮ লক্ষ ২০ হাজার একর জমি ডিভিসির সেচ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। গত বছর জলাধারে পর্যাপ্ত জল না থাকায় ৭ লক্ষ ৮৬ হাজার একর জমিতে জল দিতে পেরেছিল ডিভিসি। এ দিনের বৈঠকে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ৫,৮৭,১৮৭ একর, পশ্চিম বর্ধমানে ৫,৩৯৩ একর, হুগলি ১,৫৪,৫০৭ একর, বাঁকুড়া ৬৭,৩০০ একর ও হাওড়া ১৪,০৫০ একরে ডিভিসির সেচখাল রয়েছে। জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম ১ ও ২, পূর্বস্থলী ১ ও ২ ব্লক ছাড়া বাকি ১৯টি ব্লকে সেচখালের মাধ্যমে জল পৌঁছবে।
মন্তেশ্বরের চাষি সানাউল শেখ, মেমারির শম্ভু পালদের দাবি, “জুলাই মাসের মাঝামাঝি চাষ শুরু করে দিতে পারলে ধান পুষ্ট হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বৃষ্টি হচ্ছে না। সেচখালের জলের উপর নির্ভর হতে হচ্ছে। এর ফলে খরিফ চাষ দেরিতে শুরু হচ্ছে। অন্য চাষও দেরি হয়ে যাচ্ছে। ফসলের মান ঠিক থাকছে না। শনি-রবিবার জল পাওয়া গেলে চাষ দ্রুততার সঙ্গে শুরু হয়ে যাবে।”
কৃষি দফতরের দাবি, জেলায় ৩ লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়। এখনও পর্যন্ত ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে রোপণ হয়েছে। সেচখালের জল মিললে ১০ দিনের মধ্যে লক্ষ্যপূরণ হয়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy