টানা কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশার জেরে জামালপুর ও আউশগ্রামের কিছু জায়গাতে আলু গাছে রোগ দেখা দিয়েছে বলে চাষিদের দাবি। তাঁরা জানাচ্ছেন, ডাঁটাপচা ও নাবি ধসা রোগে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। আলুর আকারও ছোট হচ্ছে। যদিও জেলা কৃষি দফতরের দাবি, জেলায় এই রোগ এখনও বড় আকার নেয়নি। কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে রোগপোকার আক্রমণ হতে পারে। তবে তা খুব একটা ধর্তব্যের মধ্যে নয় বলে দাবি কৃষি আধিকারিকদের।
আলুর ফলন ও রোগপোকার আক্রমণ হয়েছে কি না দেখতে মঙ্গলবার জেলার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করেছেন রাজ্যের তরফে পূর্ব বর্ধমানের দায়িত্বে থাকা কীটপতঙ্গ বিশেষজ্ঞ ও মাইক্রোলজিস্ট।
চাষিদের দাবি, রাতে ঘন কুয়াশা পড়তেই ডাঁটাপচা বা ধসা রোগ দেখা দিয়েছে। গাছের পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে। গাছ ঝিমিয়ে যাচ্ছে। পাতায় বাদামি ও কালো ছোপ দেখা যাচ্ছে। সেটা ধীরে ধীরে গাছের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। জামালপুরের শিয়ালি, কোরা, মাঠশিয়ালি, উজিরপুর, মুইদিপুর, অমরপুর এলাকায় এই রোগের প্রকোপ দেখা গিয়েছে। চাষিদের দাবি, আলু গাছের বৃদ্ধি ভাল ছিল। ফলন ভাল হওয়ার অনুকূল আবহাওয়াও ছিল। কিন্তু কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশার জেরে রোগ দেখা দিয়েছে গাছে। ওই সব এলাকার চাষিদের আরও দাবি, আলু বাঁচানোর জন্য কাঁচা অবস্থাতেই তুলে নেওয়া হচ্ছে। আলুর গুণগত মান ভাল হচ্ছে না।
ডাঁটাপচা বা ধসা রোগের জন্যে কৃষি দফতরের বিশেষজ্ঞেরা মূলত ঘন কুয়াশা ও হঠাৎ করে গরম পড়ে যাওয়াকেই দায়ী করছেন। এ ছাড়া, দেরিতে চাষ, অপ্রয়োজনে জমিতে জল দেওয়ার কারণেও গাছে রোগ দেখা দিচ্ছে বলে তাঁরা মনে করছেন। এ দিন রাজ্যের ওই দুই বিশেষজ্ঞ ছাড়াও, জেলার আধিকারিকেরা জামালপুর, মেমারি, কালনার কিছু আলু জমি পরিদর্শন করেন। তাঁরা বিক্ষিপ্ত ভাবে আলুর জমিতে রোগের লক্ষণ দেখেছেন। কৃষি দফতরের পরামর্শ মেনে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ছড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। রোগ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য লিফলেট বিলি করে চাষিদের সতর্ক করা হচ্ছে বলে কৃষিকর্তারা জানিয়েছেন। জেলার কৃষি আধিকারিক তথা উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) নকুলচন্দ্র মাইতি বলেন, “রাজ্যস্তরের বিশেষজ্ঞেরা আলুর খেত পরিদর্শন করেছেন। সে ভাবে আলু গাছে রোগপোকার আক্রমণ তাঁরা দেখতে পাননি। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু জায়গায় রোগের প্রকোপ রয়েছে। তাতে ফলন মার খাবে না।” তাঁর দাবি, “এ বার অনুকূল পরিবেশ থাকায় আলুর ব্যাপক ফলনেরসম্ভাবনা রয়েছে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)