প্রকাশ্যে আসা সেই ছবি। অমিত শাহ পদ্ম ফুল নিচ্ছেন জয়দেব খাঁ (ডান দিকে)-র হাত থেকে। ছবি: সংগৃহীত।
অন্ডাল এয়ারপোর্টে অমিত শাহকে বিদায় জানাতে গিয়েছিলেন কয়লা মাফিয়া! তাঁর হাত থেকে পদ্মফুলও নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এমনই অভিযোগ তুলে সরব তৃণমূল। শুক্রবার কৃষ্ণগঞ্জ, রামপুরহাট এবং রানিগঞ্জ— রাজ্যের তিন জায়গায় সভা ছিল শাহের। রানিগঞ্জের সভা সেরে অন্ডাল এয়ারপোর্ট থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তৃণমূলের অভিযোগ, অন্ডাল এয়ারপোর্টে শাহকে যে ১৬ জন বিজেপি নেতা বিদায় জানাতে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন জয়দেব খাঁ। রানিগঞ্জ বিধানসভার বক্তানগরের বাসিন্দা এই জয়দেব এক জন কয়লা মাফিয়া বলেও অভিযোগ তুলেছে শাসকদল। ইতিমধ্যেই ভারতীয় জনতা পার্টির লেটারহেডে ওই ১৬ জন বিজেপি নেতার নাম-সহ একটি তালিকার চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে। তার তলায় সই রয়েছে বিজেপি আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের। সেখানে দেখা গিয়েছে ওই তালিকায় পাঁচ নম্বরে নাম রয়েছে জয়দেবের। যদিও ওই চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। পাশাপাশি, একটি ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে অন্ডাল এয়ারপোর্টে জয়দেবের হাত থেকে পদ্মফুল নিতে দেখা যাচ্ছে শাহকে। সেই ছবির সত্যতাও যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। যদিও বিজেপির দাবি, জয়দেব বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে কয়লা পাচারের মিথ্যা মামলা চাপানো হয়েছে। আদতে তিনি কয়লা মাফিয়া নন।
সেই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য এগ্জিকিউটিভ কমিটির সদস্য তথা আসানসোল পুরসভার কাউন্সিলর অশোক রুদ্র বলেন, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে বার বার কয়লা-বালি-লোহা মাফিয়াদের সঙ্গে কারবার করার অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি বা সিবিআই সেই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। অন্য দিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অন্ডাল এয়ারপোর্টে বিদায় জানানোর জন্য বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা কমিটির যে লিস্ট তৈরি করা হয়েছে, তাতে নাম রয়েছে জয়দেব খাঁর। কয়লা মাফিয়া হিসাবে জয়দেবের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সিবিআই-এর কাছেও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।’’
যদিও জয়দেবের দাবি, স্থানীয় বিজেপি নেতা হিসাবেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে অন্ডাল এয়ারপোর্টে গিয়েছিলেন তিনি। জয়দেব জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেছেন। বর্তমানে বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা কমিটির এবং নির্বাচন কমিটির সদস্য। দল তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিল, তাই তিনি অন্ডাল এয়ারপোর্টে গিয়েছিলেন। পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘‘২০১৯ সালের আগে আমার বিরুদ্ধে কয়লা পাচার বা কয়লা সংক্রান্ত কোনও মামলা কোনও থানাতেই ছিল না। বিজেপিতে যোগদান করার পর আমার এবং আমার পরিবারের নামে কয়লা সংক্রান্ত একাধিক মামলা করা হয়েছে। অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে।’’ কয়লা মাফিয়ার তকমা পুরোপুরি মিথ্যা বলেও দাবি করেছেন জয়দেব।
একই সঙ্গে বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পার অভিযোগ, বিজেপি করলেই মিথ্যা মামলা চাপিয়ে দেওয়া হয়। শুধু আসানসোল নয়, গোটা রাজ্যেই একই কাজ করে তৃণমূল। বাপ্পা বলেন, ‘‘বিজেপিতে যোগদান করার আগে জয়দেবের বিরুদ্ধে কয়লার কোনও মামলা ছিল না। দিলীপ ঘোষের হাত ধরে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে কয়লার একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি সমস্ত মামলারই মুখোমুখি হচ্ছেন। সিবিআইকেও তিনি সমস্ত তথ্যপ্রমাণ জমা দিয়েছেন। আদালতে বিচার হবে। জয়দেব আইনি লড়াই লড়ছেন। এখনও পর্যন্ত জয়দেবের বিরুদ্ধে সে ভাবে কোনও অভিযোগ পুলিশ পাইনি। পেলে কি পুলিশ ছেড়ে দিত?’’ যদি জয়দেব সত্যিই কয়লা মাফিয়া হয়ে থাকেন, তা হলে পুলিশ তথ্যপ্রমাণ দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? প্রশ্ন তুলেছেন বাপ্পা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy