সাংবাদিক সম্মেলনে অগ্নিমিত্রা পাল। আসানসোলে পার্টি অফিসে। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রতি পশ্চিম বর্ধমানের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে শূন্য পদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই নিয়োগে অনিয়ম হচ্ছে, বুধবার এমন অভিযোগ করলেন আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।
অগ্নিমিত্রা এ দিন অভিযোগ করেন, “সরকারের নিয়ম মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ হচ্ছে না। শিক্ষকদের কাউন্সেলিংয়ের সময়ে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত থাকছেন। তাঁরা শিক্ষকদের পছন্দ মতো স্কুল বেছে নিতে দিচ্ছেন না। ওই শিক্ষক নেতারা তাঁদেরই পছন্দ মতো স্কুলে জোর করে নিয়োগ করছেন।” কী ভাবে ‘অনিয়ম’ হচ্ছে, তা-ও বলছেন বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের নেতা পার্থ পাল। তাঁর অভিযোগ, নিয়োগের আগে নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষকদের ‘সিনিয়রিটির’ উপরে ভিত্তি করে একটি তালিকা তৈরি করা উচিত। সেই তালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করতে হবে। এর পরে সেই তালিকাভুক্ত শিক্ষকদের লিখিত চিঠি পাঠিয়ে ডাকার কথা। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। জেলা প্রথামিক শিক্ষা সংসদের কর্তারা নিজেদের পছন্দের লোকজনকে ডেকে পাঠিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে চাইছেন।
অভিযোগ মানেননি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রথীন্দ্রনাথ মজুমদার। তাঁর কথায়, “সরকার নির্দেশিত নিয়মের ভিত্তিতেই প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। না জেনে অনিয়মের অভিযোগ করা হচ্ছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে হচ্ছে। কারও কোনও সন্দেহ থাকলে তাঁরা সেখানে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি দেখতে পারেন।” একই দাবি জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) দেবাশিস সরকারেরও। তিনি জানান, অভিযোগ ভিত্তিহীন। শূন্য পদের উপরে ভিত্তি করে জেলার ‘সিনিয়র’ শিক্ষকদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকা প্রত্যেক স্কুলে পাঠিয়ে যাঁরা প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগ পেতে আগ্রহী, তাঁদের কাছ থেকে আবেদন সংগ্রহ করা হয়েছে। আবেদন সংগ্রহ করার পর আগ্রহী শিক্ষকদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এর পরে নামের তালিকা ধরে শিক্ষকদের কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হচ্ছে। কোন-কোন স্কুলে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ আছে, তা তাঁদের জানানো হচ্ছে। এর পরে তাঁরাই পছন্দের স্কুল ঠিক করে সংসদকে জানাচ্ছেন। সেই মতো তাঁদের নিয়োগ করা হচ্ছে। দেবাশিস বলেন, “সাধারণ ভাবে কথা না বলে নির্দিষ্ট করে অভিযোগ করা হোক।” এ দিকে, শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬ জানুয়ারি থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাউন্সেলিং শুরু হয়েছে। জেলায় মোট ১৫টি শিক্ষাচক্র আছে। কতগুলি শূন্য পদ আছে, তা এখনও নির্দিষ্ট করা হয়নি।
এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিধায়কের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি হিমাদ্রী সরকার। তাঁর কথায়, “বিজেপির আর কোনও কাজ নেই। তাই মিথ্যা অভিযোগ করে খবরে ভেসে থাকতে চাইছে।” যদিও, বাম প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক মধুমিতা রায়ের বক্তব্য, “অনিয়মকে কেন্দ্র করে গোলমালের খবর আমরাও পেয়েছি। বিষয়টি নজরে রয়েছে। এখনও কোনও শিক্ষক অভিযোগ করেননি। অভিযোগ এলে ছেড়ে কথা বলব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy