Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
private hospital

চিকিৎসায় ‘গাফিলতি’তে মৃত্যু, চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে

স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘হাসপাতালের চরম গাফিলতি ও অবহেলায় আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ছেলের হৃদরোগজনিত কোনও সমস্যা ছিল না।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২০ ০৩:০৪
Share: Save:

চিকিৎসার ‘গাফিলতিতে’ ছেলের মৃত্যু হয়েছে। দুর্গাপুরের বামুনাড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে অবিলম্বে তদন্ত দাবি করেছেন বাবা, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের নির্বাহী বাস্তুকার স্বপনকুমার ঘোষ। ইতিমধ্যেই তিনি চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন’কে। কাঁকসা থানাতেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, নিয়ম মেনেই চিকিৎসা হয়েছে।

বেনাচিতির নতুনপল্লির বাসিন্দা স্বপনবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছেলে স্নেহাংশু (১৭) সর্দি, কাশির সমস্যা নিয়ে ৯ সেপ্টেম্বর ভর্তি হয় ওই হাসপাতালে। করোনার উপসর্গ থাকায় তিনি নিজে তখন ভর্তি ছিলেন, কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। ছেলের সঙ্গে মায়ের কথা হয় ১৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ। হঠাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে তাঁদের জানানো হয়, ছেলের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। রোগীর হৃদরোগজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেন। তাকে স্থানান্তর করা হয় বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু এ সব করতে বেশ কয়েকঘণ্টা দেরি করা হয় বলে অভিযোগ। ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা নাগাদ মৃত্যু হয় স্নেহাংশুর।

স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘হাসপাতালের চরম গাফিলতি ও অবহেলায় আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ছেলের হৃদরোগজনিত কোনও সমস্যা ছিল না।’’ তাঁদের পারিবারিক চিকিৎসক বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বাপ্পাদিত্য মণ্ডল জানান, ওই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে স্নেহাংশু তাঁর কাছে চিকিৎসার জন্য এসেছিল। হাসপাতালের বহির্বিভাগে হেঁটেই পৌঁছেছিল সে। জরুরি ভিত্তিতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর মতো পরিস্থিতি ছিল না। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসক তাঁর রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, ‘প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়। দরকার পড়লে অক্সিজেন থেরাপি এবং পর্যবেক্ষণের জন্য রোগীকে কোনও হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। রোগী গাড়িতে চড়ে যাতায়াতের জন্য ‘ক্লিনিক্যালি ফিট’ ছিল। ‘রেসপিরেটরি ফেলিওর’-এর মতো কোনও উপসর্গ ছিল না’।

স্বপনবাবু জানান, দুর্গাপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে শয্যা না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে বামুনাড়ার ওই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় স্নেহাংশুকে। তাঁর গুরুতর অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ছেলে বাড়ি যাবে বলে কান্নাকাটি করেছিল। তাকে চুপ করাতে চিকিৎসার নামে জোর করে একটি ইনঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তার পরেই ছেলের অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে যায়।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো অভিযোগে এই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে হাসপাতালের ডেপুটি মেডিক্যাল সুপার অভিষেক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় রোগীকে অন্য হাসাপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। ইতিমধ্যেই থানা ও ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। অন্য যে কোনও তদন্তেও সহযোগিতা করা হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy