Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Specially Abled Person

Guskara: প্রতিবন্ধী ভাতার টাকায় দুই স্কুলছুটকে ভর্তি করালেন যুবক

স্নাতক উত্তীর্ণ সুদামা জানিয়েছেন, নিয়মিত বাড়িতে গিয়ে তাদের পড়াও দেখিয়ে দেবেন।

গুসকরার দুই পড়ুয়ার সঙ্গে সুদামা পাঠক। নিজস্ব চিত্র

গুসকরার দুই পড়ুয়ার সঙ্গে সুদামা পাঠক। নিজস্ব চিত্র

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়
গুসকরা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:১৫
Share: Save:

সংসারে টানাটানি। বাবার যজমানি আর নিজের মানবিক ভাতার মাসিক ১০০০ টাকায় কোনওরকমে দিন চলে। সেই ভাতার টাকা দিয়েই দুই স্কুলছুট পড়ুয়াকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার এক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন যুবক।

সুদামা পাঠক নামের বছর চল্লিশের ওই যুবক সম্প্রতি এলাকার দুই দুঃস্থ ভাই দেব ও কিষাণকে স্থানীয় সুশীলা যজ্ঞেশ্বর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে যথাক্রমে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করান। কিনে দেন স্কুলের পোশাক ও জুতো।

স্নাতক উত্তীর্ণ সুদামা জানিয়েছেন, নিয়মিত বাড়িতে গিয়ে তাদের পড়াও দেখিয়ে দেবেন।

গুসকরা শহরের শান্তিপুর বণিকপাড়ার বাসিন্দা সুদামা তাঁর বৃদ্ধ বাবা প্রভাকর পাঠকের সঙ্গে থাকেন। কয়েক বছর আগে দুর্ঘটনায় ডান পা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে সুদামা স্বাভাবিক ভাবে হাঁটাচলা করতে পারেন না। তবে কেউ বিপদে পড়েছেন শুনলে, পাশে দাঁড়াতে ‘ছুটে’ যান।

সুদামা জানান, কিছু দিন আগে খবর পান, গুসকরার লাইনপাড়ের শিবতলা এলাকার তিন ভাই-বোন দারিদ্রের কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে। ছেলেমেয়েগুলির বাবা নীলমনি রায় পেশায় দর্জি, মা সারদা কাঁচের চুড়ি ফেরি করেন।

সুদামার কথায়, ‘‘পড়াশোনার খরচ অনেক বলে ছেলেমেয়েগুলোকে প্রাইমারির পরে আর পড়াতে চাননি ওদের বাবা-মা। আমি বারবার বোঝাতে গেলেও কিছুতেই তাঁরা রাজি হচ্ছিলেন না ওঁরা। শেষে ছেলেগুলোর পড়ার খরচ বহন করব বলে কথা দেওয়ায়, তাঁরা রাজি হন।’’

কিন্তু বিহার থেকে আসা ওই দম্পতির সন্তানদের জন্মের শংসাপত্র কিংবা আধার কার্ড না থাকায় হাইস্কুলে ভর্তি করানো সমস্যা হয়ে ওঠে। সারদা বলেন, “ছেলেমেয়েদের আধার কার্ড করানোর জন্য অনেককে বলেছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি। শেষে সুদামাই আমার ছেলেমেয়েদের আধার কার্ড করিয়ে দেন। তিনিই দুই ছেলের পড়ানোর দায়িত্ব নিয়ে ওদের স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করছেন। আমাদের বুক থেকে যেন পাথর নেমে গেল।’’

তবে ১৪ বছর পেরিয়ে যাওয়ায় ওই দম্পতির মেয়েকে নিয়মের বাধায় স্কুলে ভর্তি করাতে না পেরে আক্ষেপ যাচ্ছে না সুদামার।

আউশগ্রাম ১ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অমিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাংলা শিক্ষা পোর্টালে ১৪ বছর পর্যন্ত পড়ুয়াদের বয়স অনুযায়ী সরাসরি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ১৪ বছর পেরিয়ে গেলে সরাসরি নবম শ্রেণিতে ভর্তি করানোর সুযোগ নেই।”

সুদামার উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বিডিও (আউশগ্রাম ১) অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ওই কিশোরীর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগ রয়েছে কি না, তা নিয়ে শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা বলব। স্কুলছুট কিশোরীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে কি না, খোঁজ নেব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Specially Abled Person Guskara school dropouts
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy