২জন শিক্ষক চালাচ্ছে সেকুল। প্রতীকী চিত্র।
পড়ুয়া ৩১৭ জন। শিক্ষিকা মাত্র দু’জন। একটি ক্লাসে গিয়ে ছাত্রীদের পড়া দিয়ে অন্য ক্লাসে ছোটেন তাঁরা। স্কুলের ছুটির ঘণ্টাও বাজান। পড়ুয়াদের অভিভাবকদের দাবি, শিক্ষিকার অভাবে অধিকাংশ দিনই সব ক্লাস হয় না। মিড-ডে মিল খেয়ে চলে আসে ছাত্রীরা। বছরের পর বছর এ ভাবেই চলছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের নিরোল কনকলতা জুনিয়রগার্লস স্কুল।
স্কুল সূত্রে খবর, ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দুই যুবক-যুবতীকে সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে স্কুলে পড়াতে বলা হয়েছে। তবে এর জন্য কোনও লিখিত চুক্তি হয়নি। দেওয়া হয়নি নিয়োগপত্রও।
পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় ওই স্কুলে। ছাত্রীদের অনেকে বলেন, ‘‘দুই শিক্ষিকার পক্ষে সব ক্লাস নেওয়া সম্ভব নয়। একটি ক্লাসে গিয়ে পড়া দিয়ে অন্য ক্লাসে ছুটতে হয় তাঁদের। নিয়মিত সব বিষয়ের ক্লাস হয় না। স্কুল শুরুর এবং ছুটির ঘণ্টা বাজাতে হয় শিক্ষিকাদের। নতুন শিক্ষাবর্ষে গণিতের ক্লাস এখনও শুরু হয়নি।’’
স্কুলে কী করে পড়ুয়ারা? অভিভাবকদের কথায়, ‘‘হাসি-মজা করেই ক্লাসে কাটিয়ে দেয় তারা। টিফিনের পরে, মিড-ডে মিল খেয়ে বাড়ি ফেরে।’’
২০১০-এ স্কুলটি সরকারি অনুমোদন পায়। শুরুতে সবই ঠিক ছিল। কয়েক বছর যেতে না যেতেই শিক্ষকের অভাব দেখা দেয়। অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষা দফতর থেকে শুরু করে প্রশাসনের অনেক স্তরে বারবার বিষয়টি জানানো হলেও শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ হয়নি। সে কারণেই এলাকার দুই যুবক-যুবতীকে সামান্য অর্থে স্কুলে পড়াতে বলা হয়েছে। ছাত্রী পিছু ১০০ টাকা করে অভিভাবকেরা দেন। সরকারের বিরুদ্ধে ‘উদাসীনতার’ অভিযোগ তুলে কয়েক জন অভিভাবক বলেন, “শিক্ষার নামে ছেলেখেলা চলছে স্কুলে। ছাত্রীরা স্কুলে যায়। মিড-ডে মিল খেয়ে বাড়ি চলে আসে। প্রায়ই ক্লাস হয় না। অবিলম্বে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা উচিত প্রশাসনের।’’ তাঁদের মতে, অনেক স্কুলে পড়ুয়ার অনুপাতে শিক্ষক-শিক্ষিকা বেশি রয়েছে। প্রয়োজনে সেখান থেকেও শিক্ষক-শিক্ষিকা এনে সমস্যা মেটাতে হবে।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রাজলক্ষ্মী মণ্ডল বলেন, “আপাতত দুই যুবক-যুবতীকে কিছু টাকার বিনিময়ে পড়ানোর জন্য রাখা হয়েছে। অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ বৈঠক করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’ তবে এ নিয়ে ওই দু’জন মন্তব্য করতে চাননি।
মহকুমাশাসক (কাটোয়া) অর্চনা পনধরিনাথ ওয়াংখেড়ে বলেন, “সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব।” কেতুগ্রাম চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক কুন্তল দত্ত বলেন, “ওই স্কুলে ছাত্রীর তুলনায় শিক্ষক-শিক্ষিকা কম। ক্লাস নিয়ে সমস্যা হয়। নিয়োগের ব্যাপারটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এলাকার শিক্ষাপ্রেমী এক ব্যক্তি ওই স্কুলে স্বেচ্ছায় ক্লাস নেন। বেতন দেওয়া হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy