প্রতীকী ছবি
উন্নয়নমূলক কাজকর্মের বরাদ্দ অর্থের বেশিরভাগই এখনও জেলার অধিকাংশ পঞ্চায়েত খরচ করে উঠতে পারেনি। সম্প্রতি এক বৈঠকে এ তথ্য উঠে এসেছে। ওই বৈঠকের পরেই কাজকর্মের জন্য বরাদ্দ অর্থ দ্রুত খরচ করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি।
সম্প্রতি আসানসোলে আয়োজিত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদকে নিয়ে উন্নয়নী বৈঠকে বিভিন্ন পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়ে পর্যালোচনা হয়। দেখা যায়, বহু পঞ্চায়েতই বরাদ্দ অর্থের অনেকটা খরচ করে উঠতে পারেনি। জেলাশাসক জানান, কোন পঞ্চায়েত কোন জায়গায় পিছিয়ে, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। এ বার ব্লক স্তরে বৈঠক করে বিডিও-রা বাকি কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, ‘‘বিডিওদের বলা হয়েছে, দ্রুত পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে বৈঠক করে বরাদ্দ অর্থ খরচের রূপরেখা তৈরি করে ফেলতে। কাজ করতে হবে দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে। প্রশাসনের দিকে যাতে আঙুল না ওঠে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’
পঞ্চায়েতগুলিকে উন্নয়নমূলক কাজকর্মের জন্য কেন্দ্রের চতুর্দশ অর্থ কমিশন, চতুর্থ রাজ্য অর্থ কমিশন, গ্রাম পঞ্চায়েগুলির সশক্তিকরণ (আইএসজিপি) প্রভৃতি প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করা হয়ে থাকে। ধাপে ধাপে এই অর্থ পঞ্চায়েতগুলিকে দেওয়া হয়। এক ধাপের অর্থ বরাদ্দের পরে, সেই কাজের ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ (ইউসি) জমা দিলে তবে পরের ধাপের অর্থ বরাদ্দ করা হয়ে থাকে। পশ্চিম বর্ধমানে গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৬২টি। কোন পঞ্চায়েত বরাদ্দ অর্থের কেমন কাজে লাগিয়েছে, সম্প্রতি তার পর্যালোচনা করে দেখে জেলা প্রশাসন। তাতেই এই তথ্য সামনে এসেছে।
এ দিকে, কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ আসার সময় এগিয়ে আসছে। এই পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আগের বরাদ্দ অর্থ খরচ করে উঠতে না পারলে তা ফেরত চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা ছাড়া, ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। আপাতত নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হবে ধরেই এগোতে হবে প্রশাসনকে। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পরে, নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে গেলে বহু কাজ বন্ধ করে দিতে হবে। তাই অবিলম্বে পঞ্চায়েতগুলিকে বরাদ্দ অর্থ খরচের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
কেন এই পরিস্থিতি? বিভিন্ন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ‘লকডাউন’-এর জেরে মূলত নির্মাণ সংক্রান্ত কাজকর্ম বন্ধ থাকার জন্যই বরাদ্দ অর্থ খরচের সমস্যা দেখা দেয়। তাঁদের দাবি, ‘লকডাউন’ শিথিল হওয়ার পরে কাজ শুরু হলেও অনেকে কাজে যোগ দিতে চাননি। তবে দ্রুত পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি পঞ্চায়েতের প্রধান বলেন, ‘‘সব কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরের দিকে কাজ শুরু করার চেষ্টা হলেও ভীতি কাটতে সময় লাগে। সব মিলিয়ে অনেকগুলি দিন নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’
জেলাশাসক বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে অর্থ খরচের পরিকল্পনা গড়ে কাজে গতি বাড়াতে বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দরকার হলে জেলা প্রশাসন থেকে আমরা, আধিকারিকেরা গিয়ে সাহায্য করব।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক কোটির বেশি বরাদ্দ অর্থ খরচ করতে না পারা বিভিন্ন পঞ্চায়েতের মধ্যে রয়েছে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ইছাপুর, প্রতাপপুর, লাউদোহা গ্রাম পঞ্চায়েতও। বিডিও (দুর্গাপুর-ফরিদপুর) মৃণালকান্তি বাগচি বলেন, ‘‘জেলাশাসকের নির্দেশ মতো পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। প্রয়োজনীয় রূপরেখা তৈরি করে নিয়ে কাজ শুরু করেছে পঞ্চায়েতগুলি। দ্রুত কাজ শেষ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy