‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাবের জন্য ১০ হাজার করে টাকা পান একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পাঠায় সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
পূর্ব বর্ধমানের পড়ুয়াদের জন্য পাঠানো ট্যাবের টাকা ‘চলে গিয়েছে’ উত্তর দিনাজপুরের কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ‘গায়েব হওয়া টাকা’ কোথায় গেল, তার তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পারল জেলা পুলিশ প্রশাসন। অন্য দিকে, এখনও পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমানের ৫২২ জন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা পাননি। সে নিয়ে তদন্ত চলছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সব মিলিয়ে চাপনউতর চলছে জেলা প্রশাসনের অন্দরে।
রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা এককালীন দশ হাজার টাকা পান ট্যাব কেনার জন্য। পুজোর ছুটির আগেই রাজ্যের স্কুলগুলি নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু দিন কয়েক আগে ‘অদ্ভুত’ ঘটনা ঘটে পূর্ব বর্ধমান সিএমএস হাই স্কুলে। চলতি বছরে ওই স্কুলের ৪১২ জন পড়ুয়ার জন্য ট্যাবের টাকার আবেদন করা হয় বলে জানান প্রধানশিক্ষক মিন্টু রায়। কিন্তু ২৮ জন পড়ুয়া জানান, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সেই টাকা ঢোকেনি। খোঁজ নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষই জানতে পারেন অভিযোগ সঠিক। ঘটনাক্রমে শিক্ষা দফতর এবং সাইবার থানায় অভিযোগ জানানো হয়। প্রধানশিক্ষক বলেন, ‘‘গত ২১ এবং ২২ অক্টোবর, দু’দিন ফোন করে স্কুলের ১৭ জন পড়ুয়া জানায় আমাদের জানিয়েছে যে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্যাবের ১০ হাজার টাকা ঢোকে নি। স্কুলের পক্ষ থেকে গোটা বিষয়টি জানানো হয় ডিআই, অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) এবং ডিপিওকে। ডিআইয়ের পরামর্শে সাইবার থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’ পাশাপাশি স্কুলের পক্ষ থেকে মোট ২৮ জন পড়ুয়াকে ব্যাঙ্কে গিয়ে খোঁজখবর নিতে বলা হয়েছিল। ব্যাঙ্কে গিয়ে পড়ুয়ারা জানতে পারেন, তাঁদের ট্যাবের টাকা অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে।
এ নিয়ে তদন্তের পর বুধবার জেলা প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, শুধু বর্ধমান সিএমএস হাই স্কুলই নয়, জেলার আরও কয়েকটি স্কুল মিলিয়ে মোট ৫২২ পড়ুয়া তাঁদের ট্যাবের টাকা পাননি। এ-ও জানা গিয়েছে, ওই সমস্ত টাকা উত্তর দিনাজপুরে কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে বলে নির্দিষ্ট কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করে দেওয়া হয়েছে। টাকা পাননি এমন পড়ুয়াদের বিস্তারিত তালিকা তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে কার গাফিলতিতে এমনটা হল, সেটাও জানার চেষ্টা চলেছে। কেউ দোষী হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বর্ধমান সিএমএস হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষকের দাবি, স্কুলের তরফে কোনও গন্ডগোল হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক পড়ুয়ার ব্যাঙ্কে কেওয়াইসি আপডেট আছে। সুতরাং স্কুলের কোনও ভুল বা ত্রুটি নেই।’’ অন্য দিকে, টাকা না পেয়ে হতাশ একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া জুনেদ চৌধুরী, সুদীপ্ত ধীবররা। তাঁরা বলছেন, ‘‘জানি না ওই টাকা পাব কি না। কোন ট্যাব কিনব, আগেই ভেবে রেখেছিলাম। কিন্তু সেই টাকা যে কবে পাব!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy