Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

পাশাপাশি প্ল্যাটফর্মে ট্রেন, হুলস্থূল ওভারব্রিজে

সাঁকরাইলের দুর্ঘটনায় দু’জন মারা যান। এ দিন বর্ধমান স্টেশনে হাজির যাত্রীদের দাবি, যা পরিস্থিতি হয়েছিল, তাতে অনেকেই পিষে মারা যেতে পারতেন।

বর্ধমান স্টেশনের চার ও পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে ওভারব্রিজে ভিড়, এক জনকে ঝুলতেও দেখা যাচ্ছে শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

বর্ধমান স্টেশনের চার ও পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে ওভারব্রিজে ভিড়, এক জনকে ঝুলতেও দেখা যাচ্ছে শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪৩
Share: Save:

চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে রয়েছে ছাড়ার অপেক্ষায়। তার মধ্যে পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢোকার ঘোষণা হতেই যাত্রীদের হুড়োহুড়ি শুরু ফুট ওভারব্রিজে। ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে ও পদপিষ্ট হয়ে এক শিশু-সহ জখম জনা এগারো। শুক্রবার বিকেলে বর্ধমান জংশন স্টেশনের এই কাণ্ড অনেককেই মনে পড়িয়ে দিয়েছে এক বছর আগে হাওড়ার সাঁকরাইল স্টেশনে একই ধরনের দুর্ঘটনার কথা।

সাঁকরাইলের দুর্ঘটনায় দু’জন মারা যান। এ দিন বর্ধমান স্টেশনে হাজির যাত্রীদের দাবি, যা পরিস্থিতি হয়েছিল, তাতে অনেকেই পিষে মারা যেতে পারতেন। এ দিন বিকেল ৩টে ১০ মিনিট আপ বর্ধমান-আসানসোল প্যাসেঞ্জার বর্ধমান স্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢোকে। ওই ট্রেনটি ছাড়ার কথা ছিল ৩টে ২০ মিনিটে। বিকেল সওয়া ৩টে নাগাদ পাশের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে পড়ে ডাউন পূর্বা এক্সপ্রেস। বর্ধমান স্টেশনে ফুট ওভারব্রিজের চারটে সিঁড়ির মধ্যে একটি যেখানে বন্ধ, সেখানে পাশাপাশি প্ল্যাটফর্মে একই সময়ে ট্রেন দেওয়া হল কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা। তাঁদের ক্ষোভ, সময়ে ঘোষণা করা হলে ট্রেন ধরতে ব্যস্ত যাত্রীদের মধ্যে এই ধাক্কাধাক্কি এড়ানো যেত।

তবে বর্ধমান জংশন স্টেশনের ম্যানেজার স্বপন অধিকারীর দাবি, ‘‘ঘোষণা ঠিক সময়েই করা হয়েছিল। একটি ফুটব্রিজ বন্ধ থাকায় ভিড়ের চাপে এই ঘটনা ঘটেছে।’’ পূর্ব রেলের হাওড়ার ডিআরএম ইশাক খান বলেন, ‘‘ফুট ওভারব্রিজে ওঠার চারটে সিঁড়ি রয়েছে। এসক্যালেটর বসানোর কাজ চলায় একটি বন্ধ রয়েছে। তবে যাত্রীরা সাধারণত হাওড়ার দিকের সিঁড়িটি ব্যবহার করেন না। দুর্গাপুরের দিকেরটা বেশি ব্যবহার হয়। রেল পুলিশ ও রেল রক্ষী বাহিনীকে বলা হয়েছে যাত্রীদের সচেতন করে, সব সিঁড়িতে ছড়িয়ে দিতে।’’ রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে, ধাক্কাধাক্কিতে পাঁচ জন আহত হয়েছেন। তবে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের দাবি, স্টেশনে দুর্ঘটনায় আহত বলে একটি শিশু-সহ ১১ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। ঝুমা দাস নামে এক মহিলার মাথায় আঘাত রয়েছে। বাকিরা স্থিতিশীল।

বর্ধমান স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন গড়ে এক লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। মোট ১৪৩ জোড়া লোকাল ও এক্সপ্রেস ট্রেন চলে। তবে এই পরিস্থিতি আগে হয়নি। ঘটনায় আহত হয়েছেন দুর্গাপুর থেকে বর্ধমানে আসা শুভমতি দাশগুপ্ত ও তাঁর ছেলে দীপঙ্কর দাশগুপ্ত। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘ট্রেন আসার কয়েক মুহূর্ত আগে মাইকে ঘোষণা করা হয়। ফলে, হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তাতেই এই বিপত্তি।’’ একই দাবি, ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা আহত বদ্রী রবিদাসের। তাঁর দাবি, ‘‘পূর্বা এক্সপ্রেস থেকে নেমে উপরে উঠতে যেতেই দেখি, নীচের দিকে ঝড়ের বেগে মানুষ নামছে। কিছু বোঝার আগেই ধাক্কা, তারপরে পড়ে যাই। ভিড়ে শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল।’’

রেল পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ দিন সিঁড়ি জুড়ে, প্ল্যাটফর্মে পড়েছিল অনেকের চটি-জুতো।

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Injury Stampede Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy