অভিযুক্ত মাধাই বাউড়ির বাড়িতে ভাঙচুরের নালিশ। নিজস্ব চিত্র।
তাস খেলার আসরে বচসা এবং মারামারি। তার জেরে দুর্গাপুরের রসিকডাঙা গ্রামে পালন বাউড়ি (৩৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার রসিকডাঙা গ্রামের ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ মাধাই বাউড়ি নামে স্থানীয় এক জনকে গ্রেফতার করেছে। এ দিকে, ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর একাংশ অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামেই বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি পালনের। ভাইফোঁটা উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন পালন। সেখানে গিয়ে আরও কয়েক জনের সঙ্গে তাস খেলছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে সেখানে মাধাই, তাঁর শ্যালক-সহ কয়েক জন উপস্থিত হন। তাঁরা তাস খেলা বন্ধ করতে বলেন। পালন প্রতিবাদ করায় তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে বুকে ঘুসি মারতে থাকেন অভিযুক্তেরা, প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ।
পালনের দাদা লালন পুলিশকে জানিয়েছেন, অসুস্থ অবস্থায় পালন বাড়ি ফিরেন। বারান্দায় শুয়ে থাকার সময়ে তিনি বলেন, “বুকে ব্যথা হচ্ছে।” কিছুক্ষণ পরে পালনের গলা ঘড়ঘড় করতে থাকে। স্থানীয় এক চিকিৎসককে দেখানোর পরে পালনকে লাউদোহা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা।
এ দিকে, রাতেই পুলিশ মাধাইকে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার মাধাইকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে তাঁকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় বলে আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানায়, মাধাইকে জেরা করে, ওই ঘটনায় আর কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা চলছে।
এ দিকে, শনিবার রাতেই মাধাইয়ের বাড়িতে কয়েক জন গ্রামবাসী চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। মাধাইয়ের স্ত্রী জবা সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে দাবি করেন, “অপবাদ দিয়ে আমার স্বামী, ভাই-সহ অন্যদের ফাঁসানো হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ করে আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। লুটপাটও
করা হয়েছে।”
কিন্তু কেন এই অশান্তি? লালন জানান, তাঁরা কিছু বুঝতে পারছেন না। পালনের শাশুড়ি বলেন, “জামাইকে তাস খেলা বন্ধ করতে বলেছিল ওরা। কেন খেলা বন্ধ করতে হবে, জামাই তা জানতে চাওয়াতেই মারধর করা হয়। এক জনের হাতে মোটা বালা ছিল। সেই বালার আঘাতে জামাই লুটিয়ে পড়ে।” তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, পুরনো কোনও রোষের কারণেই এই ঘটনা।
তৃণমূল পরিচালিত স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য অমিত বিশ্বাস বলেন, “গোটাটাই পাড়ার বিষয়। তাস খেলা নিয়ে সামান্য বচসা থেকে ঘটনার সূত্রপাত। কেউ-কেউ মত্ত ছিলেন বলে শুনেছি।” পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, “মারধর ও অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। গ্রামে পুলিশ পিকেট রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy