মিলছে না বরাত। ফলে, বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে ছাই দিয়ে ইট তৈরির প্রায় ৫০টি কারখানা। বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ কারখানা কর্তৃপক্ষগুলির।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে যে ছাই নির্গত হয়, তার সঙ্গে আরও কিছু দ্রব্য মিশিয়ে এক ধরনের পরিবেশ সহায়ক ইট তৈরি হয়ে থাকে। সেগুলিকে ‘ফ্লাই অ্যাশ ইট’ বলা হয়। ১৯৯৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, যে সব এলাকায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে, তার ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে সরকারি নির্মাণকাজে এই পরিবেশ সহায়ক ইট ব্যবহার করতে হবে। এর পরেই এ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠে ওই ধরনের ইট তৈরির কারখানা। আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলেও তৈরি হয় প্রায় ৫০টি কারখানা। ‘ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক্স ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক সন্তোষকুমার টাঁটিয়া জানান, ২০০২ সাল নাগাদ এই শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এই ইট তৈরির কারখানা গড়ে ওঠে। কিন্তু কখনও কোনও সরকারি কাজের বরাত তাঁরা পাননি। মাঝে-মাঝে দু’একটি সংস্থায় বরাত মিললেও তা নগণ্য। এই অবস্থায় বেসরকারি সংস্থাগুলির উপরেই ভরসা করে থাকতে হচ্ছে তাঁদের।
সন্তোষবাবুর আরও দাবি, গত কয়েক বছর ধরে এই দুই শিল্পাঞ্চলে নির্মাণ মন্দা চলছে। ফলে, তাঁদের ইট বিক্রি অনেক কমে গিয়েছে। অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন পুরসভা, ব্লক প্রশাসন, পূর্ত দফতর-সহ নানা সরকারি দফতরের নির্মাণকাজে তাঁরা ইটের বরাত পাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু সাড়া মেলে না। সন্তোষবাবু বলেন, “আমরা বর্ধমানের জেলাশাসককে বিষয়টি জানিয়েছি। তাঁর কাছে সরকারি দফতরগুলিতে এই ইটের বরাত চেয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু তার পরেও কিছু হয়নি।” এই অবস্থায় কারখানার ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই বলে তাঁদের দাবি। সেক্ষেত্রে হাজার পাঁচেক শ্রমিক কাজ হারাবেন।
কুলটির কুলতড়া লাগোয়া এই রকমই একটি ইট কারখানা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। কারখানার মালিক বিষ্ণু খোয়ালা জানান, বছর পাঁচেক আগে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে কারখানা গড়েন। প্রথম দিকে কিছু বহুতল নির্মাতা সংস্থায় ইট সরবরাহ করেছেন। এখন বাজার মন্দা চলছে। সরকারি বরাতও মিলছে না। তাঁর দাবি, “এ বার কারখানা গুটিয়ে ফেলতে হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর জেলাশাসক সমস্ত সরকারি দফতরকে নির্দেশে দেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে সরকারি নির্মাণকাজে ফ্লাই অ্যাশ ইট ব্যবহার করতে হবে। সোমবার জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “ওই ইট কারখানার মালিকেরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি তাঁদের কথা শুনেছি। সমস্ত সরকারি দফতরকে এই ইট নিতে বলেছি। কিন্তু কারখানার মালিকেরা সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেননি। তাই আধিকারিকেরা বুঝতে পারছেন না, এই ইটের বরাত কাদের কী ভাবে দেওয়া হবে।” যদিও কারখানার মালিকদের দাবি, জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলার পরে তাঁরা সরকারি দফতরগুলিতে লিখিত আবেদনও করেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy