বাঁ দিকে এক সপ্তাহ আগের রেণু খাতুন, ডান দিকে সোমবার ছাড়া পাওয়ার পর। নিজস্ব চিত্র।
টানা নয় দিনের লড়াই শেষ। যুদ্ধ জিতে ঘরে ফিরলেন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের চিনিসপুরের মেয়ে রেণু খাতুন। যাঁর ডান হাতের কব্জি কেটে দেওয়ার অভিযোগ তাঁর স্বামী শের মহম্মদের বিরুদ্ধে। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার সময় রেণু জানিয়ে দিয়েছেন, আবার নতুন করে লড়াই শুরুর কথা। সুস্থ হলে চাকরিতেও যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত ৪ জুন অর্থাৎ শনিবার দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছিল রেণুকে। ওই রাতেই তাঁর ডান হাতের কব্জি কাটা যায়। চিকিৎসকরা রেণুর হাতে অস্ত্রোপচার করেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই বাঁ হাতে লেখা শুরু করে দেন তিনি। সোমবার রেণুর ছুটি হল হাসপাতাল থেকে। হুইল চেয়ারে বসিয়ে রেণুকে হাসপাতাল থেকে বার করে আনেন তাঁর আত্মীয়রা। এর পর গাড়িতে চড়ে তিনি রওনা দেন কেতুগ্রামে চিনিসপুরের বাড়ির উদ্দেশে। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন পর যুদ্ধ জিতে বাড়ি ফিরতে পেরে ভাল লাগছে। খুব আনন্দ হচ্ছে। সুস্থ হলেই আমি চাকরিতে যোগ দেব। পাশাপাশি কৃত্রিম হাতও লাগাব। তবে সেটা মাস তিনেক পর। আমার ইচ্ছা আছে যাঁরা আমার মতোই নির্যাতিতা তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর। তাঁদের জন্য লড়াই করার। এটা আমার কাছে অন্য একটা লড়াইয়ের ক্ষেত্র। সেটা করতে চাই।’’
বাড়ি ফিরে নতুন জীবন শুরু করতে চান রেণু। শ্বশুরবাড়িতে তিনি যে আর ফিরতে চান না সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন রেণু। আর তা নিয়েই স্বামী শের মহম্মদের সঙ্গে বিবাদ চরমে ওঠে। যার জেরে ডান হাত কেটে দেওয়া হয় তাঁর। যদিও রেণুর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে পূর্ব বর্ধমানের কোনও হাসপাতালে চাকরি দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রেণু বলছেন, ‘‘সরকার আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া অনেকেই আমাকে সাহায্য করেছেন। আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমার ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই।’’
দুর্গাপুরের ওই বেসররারি হাসপাতালে রেণুর চিকিৎসা করেছেন অস্থিবিশেষজ্ঞ শশাঙ্ক কাঞ্চন। সাহস জুগিয়ে তিনি বলছেন, ‘‘আমার কাজটা ভাল ভাবে করার চেষ্টা করেছি। উনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। এই সব ক্ষেত্রে অনেক সময় সংক্রমণের ভয় থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। রেণুর হাতের শক্তিও আগের মতোই আছে।’’
শ্বশুরবাড়িতে হামলার শিকার, হাসপাতালে জীবনপণ লড়াই। শেষ পর্যন্ত এই লড়াই জিতে যাওয়া। গোর্টা পর্বটা রেণুর মানসিক শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক গুণ। আত্মবিশ্বাসের সুরে তিনি বলছেন, ‘‘এই লড়াই আমাকে জিততেই হবে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy